প্রতিবছর পূজার ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত থাকে পাহাড় ঝর্ণা আর হ্রদের শহর রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান। তবে এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। পর্যটকে ঠাসা সাজেকসহ বেশিরভাগ পর্যটনস্পট এখন জনমানব শূন্য।
গেল এক মাসের বেশি সময় ধরে সাম্প্রদায়িক সংঘাতে অশান্ত পাহাড়। তাতেই ঝিমিয়ে পড়েছে পার্বত্য এলাকার পর্যটন খাত। হোটেল ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন জানান, বোট মালিক, বোট চালক, ব্যবসায়ী যারা আছে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত।
আরো একজন জানান, আমরা যারা রাঙামাটিতে টুরিস্ট ব্যবসায়ী হিসেবে আছি, আমরা জানি না আমাদের কি হবে, কোথায় যাব।
পূজা ও কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানকে ঘিরে আগেভাগেই রাঙামাটি শহরের ৬৫টি হোটেল-মোটেল, ১৭টি ইকো রিসোর্ট এবং কাপ্তাই ও সাজেকে ১৩২টি কটেজের বেশিরভাগ রুম বুকিং দিয়েছিলেন পর্যটকরা।
তবে সম্প্রতি রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ভ্রমণে না যাওয়ার অনুরোধ জানানোর পর থেকেই বাতিল হয়েছে বেশিরভাগ বুকিং। এমনকি পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে যারা অবস্থান করছিলেন তারাই ফিরে গেছেন। এতে ছুটিকে ঘিরে ব্যবসায়ীদের নেয়া প্রস্তুতিতে একেবারেই মন্দা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্যান্য বছর হোটেল-মোটেল ও কটেজগুলোতে যেখানে জায়গা দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে বর্তমানে সেখানে পর্যটক খরা চলছে। এতে অক্টোবরের এই ক'দিনে পার্বত্য জেলার পর্যটনখাতে ক্ষতি হতে পারে ৪০ কোটি টাকার বেশি।
রাঙামাটির স্থানীয়দের মধ্যে একজন জানান, সাম্প্রতিক যে সমস্যা এই জন্যই পর্যটক আসছে না। আমরা খুবই লসের মুখে আছি।
এদিকে তিন পার্বত্য জেলায় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশনার পর থেকে কক্সবাজারে বেড়েছে হোটেল-মোটেল বুকিং। এরই মধ্যে সমুদ্র নগরীতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন ভ্রমণপিপাসুরা। পূজার ছুটিতে অন্য বছরের তুলনায় এবারে কয়েকগুণ বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা। তাই আগেভাগেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। এখন পর্যন্ত বুকিং হয়ে গেছে ৫০ শতাংশ রুম।
কক্সবাজারে প্রতি বছর দুর্গাপূজার ছুটি ঘিরে ১শ থেকে দেড়শ কোটি টাকা বাণিজ্য হয়। কক্সবাজারে হোটেল মালিকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘কক্সবাজার এলাকায় এবার বেশি ভিড় হবে। কারণ বান্দরবান, রাঙামাটিতে পর্যটক নিষেধ করা হয়েছে।’
কক্সবাজারে প্রতি বছর দুর্গাপূজার ছুটি ঘিরে একশ থেকে দেড়শ কোটি টাকা বাণিজ্য হয়।