পাহাড়ের পাদদেশে পাহাড় কেটে স্থাপনা গড়ে ওঠে বহুদিন আগে থেকেই। অভিযোগ আছে স্থানীয় কাউন্সিলরের ছত্রছায়ায় এসব স্থাপনা গড়ে তোলেন প্রভাবশালীরা। তবে এতদিন ক্ষমতার দাপটে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন তারা। গড়ে তোলেন অবৈধ দখলদারের বিশাল সাম্রাজ্য। খামার, প্লট তৈরি ও বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।
অবশেষে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আজ সকাল থেকে অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসন। সাথে ওয়াসা, সিডিএ, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনও সহযোগিতায় থাকে। কেটে দেয়া হয় পানির লাইন, বিদ্যুতের লাইনসহ সমস্ত সেবা।
ওয়াসার ম্যাজিস্টেট বলেন, 'আমাদের ওয়াসা কাজ করছে, সাথে বিভিন্ন সংস্থা সরকারি কাজ করছে। এখানে দেখা যাচ্ছে অনেকের লাইসেন্স তো নেই, কিন্তু তারা পানির ব্যবসা করছে। এগুলো অবৈধ, সেজন্য আমরা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।'
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এ অভিযানে নগরীর কালীরছড়া খালের পাশেও অভিযান চলে। গত দু'দিন ধরে এসব স্থানে জরিপ করে সীমানা নির্ধারণ করা হয়। সেটি ধরেই খাল উদ্ধার শুরু হয়।
কাট্টলী সার্কেলের সহকারি কমিশনার আরাফাত সিদ্দীকী বলেন, 'এই খালটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংস্থা এবং ব্যক্তি পর্যায়ের দুর্বৃত্তদের কারণে এগুলো দখল হয়ে গেছে। কিছু জায়গায় ভরাট হয়ে এই খালের গতিপথটিই সরে গেছে।'
তবে উচ্ছেদ চলাকালীন নিজেদের জায়গার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কাগজপত্র নিয়ে হাজির হন অনেকে। এসময় ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পরেন তারা। মারধর করা হয় এক ব্যক্তিকে। এসময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় একজন বলেন, 'আমার সিটি প্ল্যানেও আছে। আমি ব্যাংকে চাকরি করছি। ব্যাংকে মর্টগেজ রেখে এই বাড়িটা করছি। এখন তারা আসছে এই বাড়ি ভেঙ্গে দেবে, তাহলে এখন আমার আর কী করার আছে। কিছু তো খুঁজে পাচ্ছি না আমি।'
তবে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর এসব জায়গার সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানিয়েছে সিটি করপোরেশন।
চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম বলেন, 'পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি আছে বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে। এই কমিটি এবার স্ট্রং আছে। এখানে পুনরায় আবার কোনো বসতি স্থাপনের সুযোগ নেই।'
২৯তম পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।