চট্টগ্রামে বাণিজ্য সংগঠনগুলোয় নেতৃত্ব সংকটে অস্থিরতা

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সংবাদ সম্মেলন
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সংবাদ সম্মেলন | ছবি: এখন টিভি
0

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠনে নেতৃত্ব আর নির্বাচন নিয়ে চলছে অস্থিরতা। চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট, বন্দর, চেম্বার, শিপিং এজেন্টসহ বিভিন্ন সংগঠনে নেতৃত্ব নিয়ে মুখোমুখি দুটি পক্ষ। কিছু সংগঠনে বিনাভোটে পদ দখলের চেষ্টাও চলছে। এতে ক্ষুব্ধ সাধারণ ব্যবসায়ীরা। এদিকে, ৮ মাস আগে চট্টগ্রাম চেম্বারের সব পরিচালক পদত্যাগের পর প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে যোগ্য নেতৃত্ব চান ব্যবসায়ীরা।

বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার প্রধান সমুদ্র বন্দরের অবস্থানের কারণে দেশের ৪০ শতাংশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রিত হয় চট্টগ্রাম থেকে। স্থানীয় ও জাতীয় নীতি প্রণয়নে চট্টগ্রাম চেম্বারসহ এ অঞ্চলের বাণিজ্য সংগঠনগুলো আলাদা গুরুত্ব বহন করে। এসব সংগঠনগুলোতে বিগত সময়ে একচেটিয়া আধিপত্য দেখিয়ে গেছে পতিত আওয়ামী সমর্থিতরা।

বিশেষ করে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ১৬ বছর ধরে কুক্ষিগত করে রেখেছিল সাবেক এমপি এম এ লতিফ ও এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের পরিবারসহ গুটি কয়েক ব্যবসায়ী।

অনেকটা বিনাভোটে টানা চারবার সভাপতি ছিলেন মাহবুবুল আলম। পরে চট্টগ্রাম চেম্বারের কোটায় তিনি এফবিসিসিআই সভাপতি হলে এরপর বিনা ভোটে ২৪ জন পরিচালক নির্বাচিত হন। সভাপতি করা হয় এম এ লতিফের ছেলে ওমর হাজ্জাজকে।

ব্যবসায়ীদের আন্দোলনে পদত্যাগ করে সভাপতিসহ পুরো পরিচালনা পর্ষদ। পরে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আনোয়ার পাশাকে করা হয় প্রশাসক। বর্তমানে দৈনন্দিন রুটিন কাজ চললেও ৮ মাস ধরে ব্যবসায়িক নেতৃত্ব না থাকায় যথাযথ সেবা না পাওয়ার অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কর্মার্সের সাবেক সিনিয়র সভাপতি মো. নুরুল হক বলেন, ‘প্রশাসক তো একজন। তার দ্বারা তো সব জায়গায় রিপ্রেজেন্ট করা সম্ভব না। যত দ্রুত সম্ভব একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন দেয়া।’

বারভিডা সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘একজন দিয়ে তো এতগুলো কাজ করা সম্ভব না।’

চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠনে চলছে অস্থিরতা ও নির্বাচন ছাড়াই পদ দখলের মহড়া। এরই মধ্যে বিনাভোটেই এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্ব নিয়েছে একটি পক্ষ। নির্বাচন পেছানো হলে ও শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনেও চলছে পদ দখলের চেষ্টা।

প্রশাসক বলছেন, ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে নির্বাচনের জন্য বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিদের্শনা পেলেই নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হবে।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, ‘কিছু কিছু সংস্কার আমরা ইতোমধ্যে করেছি। নতুন সদস্যপদ নেয়ার ক্ষেত্রে যে স্বচ্ছতা, সেটা আমরা নিয়ে এসেছি। ভুয়া সদস্য কেউ থাকলে সেগুলোর চিহ্নিত করার ব্যবস্থা করেছি। তবে আইনগত ও কাঠামোগত সংস্কারের বিষয় এখন পর্যন্ত সমাধান হয়নি।’

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিনাভোটে অযোগ্য লোকজন বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠনে পরিচালনায় থাকলে পিছিয়ে পড়বে চট্টগ্রাম। ক্ষুণ্ন হবে ব্যবসায়িক স্বার্থ।

ইএ