অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে ট্রাম্প প্রশাসনের জাদুর কাঠি শুল্কারোপ। বাণিজ্যে ভারসাম্য, মার্কিন শিল্প ও ব্যবসায়ীদের রক্ষায় এই উদ্যোগ নিয়েছেন ট্রাম্প।
শুল্কারোপে বিদেশি পণ্যের দাম বাড়বে। এতে মার্কিন ভোক্তারা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পণ্যের দিকে ঝুঁকবেন। এছাড়া শুল্কের অর্থ রাজস্ব তাদের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে।
তবে অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, ট্রাম্পের এই উদ্যোগ উল্টো পথেও হাঁটতে পারে। শুল্কারোপের সমস্ত লক্ষ্য অর্জন ব্যর্থ হলে মন্দায় পড়তে পারে মার্কিন অর্থনীতি। আমেরিকান জনগণ উচ্চমূল্যের বিদেশি পণ্যের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পণ্যের দিকে ঝুঁকলে কমবে শুল্ক আদায়।
আরো পড়ুন:
আর করের বোঝা বইতে হবে মার্কিন ভোক্তাদের। মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মর্গ্যানের পূর্বাভাস যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি সংকুচিত হবে এবং এর প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতি মন্দায় পড়ার সম্ভাবনা জেগেছে ৬০ শতাংশ।
ট্রাম্পের শুল্কনীতি অনিশ্চয়তার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে ভুল পথে হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্র।
ব্যাংক অব ইস্ট এশিয়া সিইও বি মিংকিয়াং বলেন, ‘আমার মতে ট্রাম্প বিশ্ব বাজারকে অনিশ্চয়তা দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। যা ঝুঁকিতে ফেলেছে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিকে। এই ধরনের ক্ষতি ও ঝুঁকি কমাতে সরকার ও ব্যবসায়িক পক্ষকে তাদের কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’
আরো পড়ুন:
চলমান অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে মার্কিন জনগণকে দৃঢ়ভাবে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। ট্রুথ সোশ্যালের এক পোস্টে তিনি জানান, শুল্কারোপের মাধ্যমের মার্কিন অর্থনীতিতে বিপ্লব ঘটবে।
তবে এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে অন্যান্য দেশগুলো নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য জোরদারের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থনীতিবিদদের ধারণা, শুল্কনীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব বাণিজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।
আরো পড়ুন:
জাপান ম্যাক্রো অ্যাডভাইজারস ইনকর্পোরেটেডের প্রধান অর্থনীতিবিদ তাকুজি ওকুবো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র মুক্ত বাণিজ্যের ধারা থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করতে চায়। তাদের এটা করতে দেয়া দরকার। তখন কাউকে না কাউকে এই মুক্ত বাণিজ্যের বৈশ্বিক ব্যবস্থা বজায় রাখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া এখানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া আছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মতো অতীতে অনেক বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে।’
এরই মধ্যে মার্কিন পণ্যে চীন ৩৪ শতাংশ এবং জাপান ২৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে ব্রিটেনের জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার এক মাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে তাদের গাড়ি রপ্তানি স্থগিত করেছে। ব্রিটিশ-নির্মিত গাড়ির দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক যুক্তরাষ্ট্র। ভারতের টাটা মোটরসের মালিকানাধীন জাগুয়ার ল্যান্ড রোভারও তাদের রপ্তানিতে সাময়িক স্থগিতাদেশ দেয়।