নেত্রকোণার বিস্তৃত হাওরের অনাবাদী জমিগুলোতে এবার ব্যাপকভাবে আবাদ হয়েছে মিষ্টি কুমড়ার। তাই স্থানীয় বাজারগুলোতেও বেড়েছে সরবরাহ।
চাষিরা বলছেন, বাজারে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭ থেকে ১০ টাকায়, আর খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। যাতে উৎপাদন খরচ তুলতে হিমশিম অবস্থা কৃষকের।
একজন বিক্রেতা বলেন, ‘না বেচে তো উপায় নেই, দাম তো কমে যাচ্ছে।’
হাওরের কৃষক মতিউর রহমান লালন। চলতি বছর পাঁচজন বন্ধু মিলে ১৬ একর জমিতে আবাদ করেছেন মিষ্টি কুমড়া। গতবছর একই জমিতে লাভবান হলেও এবছর দাম না থাকায় ক্ষতির শঙ্কায় তারা।
মতিউর রহমান লালন বলেন, ‘সরকারের কাছে জানতে চাই যে কোন সিন্ডিকেটের কারণে এমন হলো। এবার দ্বিগুণ লাভের আশা ছিল, তবে এখন লাভ তো দূরের কথা, আসলটা তোলাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
নেত্রকোণার মদন ও খালিয়াজুরীসহ হাওরের প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে। কৃষকরা বলছেন, জমি তৈরি, বীজসহ উৎপাদন খরচ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তবে সেই তুলনায় বাড়ছে না ফসলের দাম। ফলে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। সেই সঙ্গে পাইকাররা জমি থেকে কম দামে মিষ্টি কুমড়া কিনে বেশি দামে বাজারে বিক্রি করছেন বলেও অভিযোগ তাদের।
একজন কৃষক বলেন, ‘প্রতি কেজিতে আমাদের উৎপাদন খরচ ১০ থেকে ১২ টাকা কিন্তু এখন বেচতে হচ্ছে ৮ টাকা, ৬ টাকা, ৫ টাকায়।’
কৃষি বিভাগ বলছে, চাষিরা যাতে ন্যায্য মূল্য পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। একইসঙ্গে হাওরের অনাবাদী জমি চাষের আওতায় আনতে মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলছেন কর্মকর্তারা।
নেত্রকোণার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, ‘এখানে মধ্যস্বত্বভোগী বা সুবিধাভোগীদের হাত বদলের খুব বেশি সুযোগ নেই, বেশিরভাগ কৃষকরা সরাসরিই বিক্রি করে থাকেন।’