কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর পরিচিত চরের হাট হিসেবে। ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও গঙ্গাধর, এই তিন নদের মিলিত ধারার পাড়ের এই হাটে বেচাকেনা হয় চরে উৎপাদিত ফসল। জেলায় অন্যতম বড় হাটে এখন উঠছে নতুন পাট।
বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে নৌকায় করে চাষিরা পাট এনে বিক্রি করলেও তাদের মুখে নেই হাসি। তারা জানান, খরায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পাট বোনা যায়নি। এরপর অতিবৃষ্টি আর বন্যায় তছনছ করে দিয়েছে পাট খেত। এরপরও যেটুকু পাওয়া গেছে মান ভালো না হওয়ায় ফড়িয়াদের কাছে নামমাত্র মূল্যে পাট বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
একজন পাটচাষি বলেন, 'বাজার তেমন সুবিধাজনক নয়। পাটের দাম একেবারে কম। মোটামুটি মানের পাট ২ হাজার ৭০০ আর ভালো মানের পাট ৩ হাজার।'
এবছর জেলায় ১৭ হাজার ৯৫০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও ৬৮৫ হেক্টর কম জমিতে পাট আবাদ হয়। এরমধ্যে খরা ও বন্যায় ২ হাজার ৮৮৪ হেক্টর জমির পাট খেত পুরোপুরি নষ্ট হয়। এমন অবস্থায় পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে নাবি জাতের রোপা আমন বা আগাম রবি ফসল হিসেবে ভূট্টা, সরিষা অথবা মাসকালাই আবাদের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ড. মো. মামুনুর রহমান বলেন, 'যেখানে যেখানে বন্যার পানি নেমে গেছে, তাদের আমরা দ্রুত রোপা আমন চাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করছি। যেগুলো ১৫ দিনর মধ্যে পানি নেমে যাবে সেগুলোতে মাসকালাই, এবং পরবর্তীতে আগাম জাতের ভুট্টা, সরিষা এবং শাকসবজি চাষ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছি চাষিদের।'
এবার জেলার ২১ হাজার ৩৪৬ জন চাষির ১০ হাজার ২৪০ টন পাট নষ্ট হয়েছে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৫৭ কোটি টাকা।