বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মে মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২৫ লাখ ৯০ হাজার বেকার আছেন। জুন শেষে যা দাঁড়ায় ২৬ লাখ ৪০ হাজারে। ২০২৩ সালে গড় বেকারের সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৭০ হাজার। অর্থাৎ এক বছরে দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। এর মধ্যে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীর সংখ্যা বেশি।
দেশে শিক্ষিত বেকারের তুলনায় কর্মসংস্থান কম। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সেই সুযোগ আরও কম। দেশে সবমিলিয়ে ২০ লাখের কাছাকাছি মানুষের সরকারি চাকরি করার সুযোগ রয়েছে।
এর উপর ২০২০ সালের করোনা মহামারি, রাজনৈতিক অস্থিতশীলতাসহ নানা কারণে নির্ধারিত সময়ে শেষ হয় না শিক্ষাবর্ষ। এমন প্রেক্ষাপটে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
২০১৮ সালে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। সম্প্রতি গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ দাবি আরও জোরালো হয়। বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারকে যৌক্তিক বয়স নির্ধারণে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে। সেপ্টেম্বরের শুরুতে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধির সঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করেন কমিটির সদস্যরা।
আজ (সোমবার, ১৪ অক্টোবর) সকালের বৈঠকে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। যেখানে ছেলেদের জন্য ৩৫ ও মেয়েদের জন্য ৩৭ বছর করতে সরলারের কাছে সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেয় পর্যালোচনা কমিটি।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, 'এই যে মেয়েদের জন্য একটু বেশি বয়স করে ৩৭ দেয়া আর ছেলেদের ৩৫ দেয়া, এটা আমরা সুপারিশ করেছি। যেহেতু আজকে মিটিংয়ে যাচ্ছে সেজন্য আমি আজকে বললাম এই কথাটা। মেয়েদের বিষয়ে আমরা এজন্য দিয়েছি যে মেয়েরা বিভিন্ন কারণে ছেলেদের মতো ওই বয়সে পরীক্ষা দেয়া সম্ভব হয় না।'
তবে, চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা এখনও নির্দিষ্ট হয়নি বলে জানান, বয়সসীমা বৃদ্ধি পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক।
তিনি বলেন, 'এখন যারা চাকরিতে আছে তারাই তো অবসরে যাবে। তারা নরমাল কোর্সেই যাবে অবসর। চাকরিতে প্রবেশে বয়স বাড়ানোর কারণে তাদের ওপর তো কোনো ইমপ্যাক্ট হচ্ছে না।'
সরকারের চূড়ান্ত ঘোষণা এলে এটি হবে ৩৩ বছর পর চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। ১৯৯১ সালে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ২৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করা হয়েছিল। এবং অবসরের বয়সসীমা ছিল ৫৯ বছর। যদিও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে ছিল ৩২ বছর।