ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের হাজারতম দিন: যুদ্ধ বন্ধের নেই কোনো ইঙ্গিত
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ১০০০ তম দিন পেরিয়ে গেলেও পাওয়া যাচ্ছে না যুদ্ধ বন্ধের ইঙ্গিত, প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। যদিও মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর সহস্র দিন অতিবাহিত হওয়ায়, নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে যুদ্ধ বন্ধের বার্তা দিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। যুদ্ধকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সদিচ্ছা ছাড়াও অভিনব এসব আয়োজনে চোখে পড়েছে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা। এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে নিজেরা আগ্রসন চালালেও ইউক্রেনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে ইসরাইল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পা দিলো সহস্রতম দিনে
রাশিয়ার বিরুদ্ধে এক হাজার দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনকে ১৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও জেলেনস্কির যুদ্ধজয় কিংবা ন্যাটো সদস্যপদ লাভের স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হওয়ার পথে। এরইমধ্যে গ্রিসের সমান এলাকা হারিয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়ার পক্ষে উত্তর কোরীয়রা মাঠে থাকলেও একাই লড়তে হচ্ছে কিয়েভ সেনাদের। জনগণের ভাঙ্গতে থাকা মনোবলের পাশাপাশি ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনও ভাবাচ্ছে জেলনস্কি প্রশাসনকে।
ইসরাইলের হামলার জবাব দিতে ইরানের দিকনির্দেশনা
ইসরাইলকে হামলার জবাব দিতে কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনী। জনগণ ও দেশের স্বার্থ রক্ষা করে ইরান তার শক্তি প্রদর্শন করবে বলে জানান তিনি। ইসরাইল বলছে, ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির সক্ষমতাকে আঘাত করা হয়েছে। এদিকে, তেহরানে মাটিতে ইসরাইলের হামলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছে ইরান।
ইরানে করা হামলা বাংকারে বসে অভিযান পর্যবেক্ষণ করলেন নেতানিয়াহু
ভোর রাতে ডজনখানেক যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরানে করা হামলা বাংকারে বসে পর্যবেক্ষণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তেহরান, খুজেস্তান ও ইলাম প্রদেশের সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানোর কথা জানালেও ইরান বলছে, সব হামলাই প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে। এদিকে পাল্টা হামলার জন্য ইরান প্রস্তুত বলে জানিয়েছে ইসলামিক রেভুল্যুশনারী গার্ড ক্রপস (আইআরজিসি)।
নিজ দেশের জনগণের তোপের মুখে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি
ন্যাটোতে ইউক্রেনকে যুক্ত করাসহ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আরও জোরালো পদক্ষেপ নিলে চাপে পরে শান্তি আলোচনায় রাজি হবে রাশিয়া। পার্লামেন্টে এমনই এক বিজয় পরিকল্পনা তুলে ধরে ইউক্রেনীয়দেরই তোপের মুখে পরলেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনীয়রা বলছেন, বিজয়ের জন্য শান্তি আলোচনা মানে রাশিয়াকে আরও শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ করে দেয়া। এই দিন দেখার জন্য স্বাধীনতাকামী তরুণরা প্রাণ বিলিয়ে দিচ্ছেন না বলেও দাবি তাদের।
নিজেদের স্বার্থেই ইসরাইলকে যুদ্ধে নামিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র?
গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে লাভবান হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে হামলার জন্য তেল আবিবকে সামরিক সহায়তা দিচ্ছে ওয়াশিংটন। এই অর্থ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকেই বোমা, ক্ষেপণাস্ত্র আর যুদ্ধবিমান কিনছে ইসরাইল। ঘুরে ফিরে সহায়তার অর্থ যেমন মার্কিন প্রভাবশালী অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে যাচ্ছে, তেমনি অতিরিক্ত অস্ত্র তৈরির জন্য যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ছে কর্মসংস্থান। যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির 'কস্টস অব ওয়ার' গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য।
হিজবুল্লাহর মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়ার চেষ্টা ইসরাইলের
দলপ্রধানসহ একের পর এক হাইপ্রোফাইল নেতাকে হত্যার মাধ্যমে হিজবুল্লাহর মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করছে ইসরাইল। কিন্তু তাও ইসরাইলের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছে গোষ্ঠীটি। বিশ্লেষকরা বলছেন, হিজবুল্লাহ এমন এক চেতনা যাকে পুরোপুরি বাতিল বা নির্মূল করা সম্ভব নয় কখনোই।
ইসরাইলের বিপক্ষে আরেক মিত্র দেশ ফ্রান্স
লড়াই চালানোর হুঁশিয়ারি নেতানিয়াহুর
লেবাননে ছয় দিনের স্থল অভিযানে ৪৪০ হিজবুল্লাহ যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করছে ইসরাইল। এমনকি হিজবুল্লাহর তৈরি ২৫০ মিটারের একটি গোপন টানেল ধ্বংসেরও দাবি তাদের। একইসঙ্গে ইরানের নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কঠোর জবাব দিতে প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছে দেশটি। এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ উত্তেজনা কমাতে গাজায় ব্যবহৃত অস্ত্র ইসরাইলের কাছে আর বিক্রি না করার আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তবে মিত্রপক্ষের কারো সমর্থন না পেলেও লড়াই চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।
ইসরাইলের পাল্টা হামলার ওপর নির্ভর বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধের শঙ্কা
ইসরাইলে প্রায় ২শ'টি মিসাইল হামলার জবাবে তেল আবিব ও তেহরানের হুঁশিয়ারি ও পাল্টা হুঁশিয়ারিতে উত্তপ্ত হয়ে আছে মধ্যপ্রাচ্য। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইলের পাল্টা হামলার ধরনের ওপর নির্ভর করছে বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধের শঙ্কা। যদিও বছরব্যাপী গাজা যুদ্ধের কারণে ইসরাইল ও ইরান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক দিয়ে ব্যাকফুটে থাকায় আপাতত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর শঙ্কা নেই বলেই মত দিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায় না ইরান
মধ্যপ্রাচ্যের চলমান অস্থিরতায় চরম উত্তেজনা বইছে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে। প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছে ইসরাইল। যদিও ইরান বলছে তারা ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায় না। এদিকে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরাইলের হামলা করার পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ইসরাইলে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞারও কড়া সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র। এমন পরিস্থিতিতে সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে।