দেশে এখন
বিশেষ প্রতিবেদন
0

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফর ভারতের জন্য বিশেষ বার্তা: আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক

তিস্তা প্রকল্প ও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে অগ্রগতির প্রত্যাশা

দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে চীনে গেলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সফরকে ভারতের জন্য বিশেষ বার্তা বলছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। সফরে তিস্তা প্রকল্প ও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে অগ্রগতি আসতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বাংলাদেশের কূটনৈতিক আচরণের নানামুখী পরিবর্তনের আলোচনার মধ্যেই চীনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর। আর এই আলোচনাকে আরও উসকে দিয়েছে তিস্তা ইস্যু।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে ফের নবায়ন হতে চলেছে তিস্তা নিয়ে ঢাকা বেইজিংয়ের বোঝাপড়া।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘গাইডিং এমওইউয়ের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে সেটা আমরা রিনিউ করব এটা হলো আমাদের প্রথম কাজ। এছাড়া প্রজেক্টের ব্যাপারে আরো আলোচনা দরকার রয়েছে। তবে বাংলাদেশ তার নিজের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেবে। এটা আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন।’

উত্তরের জনপদের জীবনমান উন্নয়নের যে প্রকল্পে বিরোধিতার সুর দেখিয়েছিল ভারত, চীনের সাথে সেই প্রকল্পের অগ্রগতিকে কীভাবে দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা?

ঢাবি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওবায়দুল হক বলেন, ‘এ সফরটি তাৎপর্যপূর্ণ অনেকগুলো কারণে তার মধ্যে ভারত অন্যতম। যেহেতু তারা আমাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। আমরা সব সময়ে দেখে এসেছি ভারতেই প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর করা হয়। এবার চীন সফরের মাধ্যমে আমার মনে হয় ভারতকে একটা বার্তা দেয়া হচ্ছে, যে আমরা পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নের সার্বভৌমত্ব এক্সারসাইজ করব।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘তিস্তার ব্যাপারেও বাংলাদেশ হয়ত এবার বড় আকারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কারণ বিগত সরকারের শেষ সময় চীনও বলেছে তারা সহযোগিতা দিতে রাজি আছে। তারাও বুঝতে পেরেছে সমাধান আর শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে হবে না। তাই বাংলাদেশের পরিকল্পনায় চীনও আসতে পারে। সেই জায়গায় একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর আমন্ত্রণে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার এই সফরে বিশেষ গুরুত্ব পাবে রোহিঙ্গা ইস্যু। যদিও মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে এখনো পর্যন্ত অনিশ্চয়তায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। তবুও এই বিশ্লেষক মনে করেন, সফরে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আসতে পারে।

অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই ইস্যুটি জাতিসংঘে উত্থাপন করেছেন। এছাড়া এ ইস্যুতে একটা আন্তর্জাতিক কনফারেন্সও হতে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে এই বিষয়ে চীন জানতে চাইবে আমাদের পরিকল্পনাটা কী? এই বিষয়ে যদি কোনো নতুনত্ব যদি আসে। তাহলে একটা সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।’

এছাড়াও, সফরে ব্যবসা বাণিজ্য, ঋণের সুদহার কমানো, সামরিক সহায়তা, স্বাস্থ্য খাতে সহায়তার পাশাপাশি সম্পর্কের পাঁচ দশক পূর্তিতে আগামী মার্চে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের বেইজিং সফর নিয়েও আলোচনা হবে।

এএম