দেশে এখন
0

চসিকে নিবন্ধনের কাজ শুরু করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা

চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) অনেক ওয়ার্ডে কাউন্সিলররা দীর্ঘদিন অনুপস্থিত রয়েছেন। তাই এসব ওয়ার্ডে নাগরিকদের জন্ম-মৃত্যু, জাতীয়তা ও চারিত্রিক সনদের মতো বিভিন্ন সেবা দেয়ার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের। তাই দীর্ঘদিনের আটকে থাকা নানা সনদের আবেদন ওয়ার্ড কার্যালয়ে গিয়ে যাচাই বাছাই শেষে নিবন্ধনের কাজ শুরু করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রাম নগরীর ৭ নম্বর ষোলশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে কার্যালয়ে অনুপস্থিত। জন্ম-মৃত্যু বা ওয়ারিশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সনদ নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন অনেক বাসিন্দা। জরুরি ভিত্তিতে যাদের এসব সনদ দরকার ছিল আত্মগোপনে থেকে সেসব সনদে স্বাক্ষর করেন কাউন্সিলর। এক্ষেত্রে জন্ম সনদ ছাড়া কিছু কিছু সনদ দিচ্ছেন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলররাও।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের সচিব তোফায়েল আহমেদ বলেন, 'কিছুটা ভোগান্তি হয়েছে, তারপরও উনি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন তার বাসায় বসে বা অন্য জায়গা থেকে আমাদের সাপোর্ট দিয়েছেন। যার কারণে আমরা নাগরিক সেবা চালু রাখতে পেরেছি। না হলে পারতাম না।'

চসিকের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর জেসমিন পারভীন জেসি বলেন, 'জন্মনিবন্ধন ছাড়া মোটামুটি ওয়ারিশ সনদ, মৃত্যু সনদ, জাতীয়তা সনদ, প্রত্যয়ন থেকে যেগুলো দেয়ার এখতিয়ার আমাদের আছে, সেগুলো আমরা দিয়ে যাচ্ছি।'

নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের ১৪টি কার্যালয়ে একই অবস্থা। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে পলাতক জনপ্রতিনিধির অনেকেই অফিস না করায় ব্যাহত হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এসব সেবা। এ কারণে জন্ম ও মৃত্যু সনদের আবেদন জমে স্তুপাকার ধারণ করেছে।

সংকট নিরসনে এসব ওয়ার্ডের সনদ দেয়ার ক্ষমতা পেয়েছেন করপোরেশনের তিন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা। ১৪টি ওয়ার্ডকে ছয়টি জোনে ভাগ করে এ দায়িত্ব পালন করছেন তারা। স্থানীয় সরকার বিভাগের সাম্প্রতিক এক প্রজ্ঞাপনে এ ক্ষমতা দেয়া হয় তাদের।

চসিকের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, 'গতকাল ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে কাজ করেছি এবং যতগুলো পেন্ডিং ছিল, সবগুলোই আমরা সলভ করেছি। আজকে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে আসছি, এখানে সমস্যা সমাধান করে আমি ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে যাবো। আশা করি জনগণের যে পেন্ডিং কাজগুলো ছিল, আমরা খুব শিগগিরই এগুলো সমাধান করতে পারবো।'

সনদ দিতে তথ্য যাচাই বাছাইয়ে কর্মকর্তাদের সহায়তা করছেন ওয়ার্ড জন্ম নিবন্ধন কর্মকর্তা ও সচিব।

৭নং ওয়ার্ডের জন্ম নিবন্ধন কর্মকর্তা শিশু রাণী দে বলেন, 'আঞ্চলিক কর্মকর্তা দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে এখনও স্বাক্ষর করাতে পারি নাই। ওনার আইডি পাসওয়ার্ড ক্রিয়েট করার পর অনুমোদনের বিষয় আছে। সেই অনুমোদনের জন্য আমরা পেন্ডিং রেখে দিয়েছি। তার অনুমতি পেলে আমরা প্রিন্ট দেবো, তারপর তার স্বাক্ষর নিয়ে জনগণকে সরবরাহ করতে পারবো।'

৫ তারিখের পর থেকে জন্ম ও মৃত্যু সনদ পেতে দুর্ভোগে পড়েছিল নগরবাসী। নতুন সিদ্ধান্তে সেই দুর্ভোগ লাঘব হওয়ায় সন্তুষ্ট তারা।

স্থানীয় একজন বলেন, 'আগে যদি দিতাম, তাহলে দুই বা তিন দিন পর আমরা পাইতাম। এখন তো অফিসে লোক নেই, এখন পাচ্ছি না। যদি লোক আসে তাহলে তো আমাদের সবার জন্য ভালো, কাজগুলো দ্রুত হবে। আশা করি ভালো কিছুই হবে।'

কর্মকর্তারা জানান, জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতিতে নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে আটকে ছিল হাজারখানেক জন্ম সনদের আবেদন। তবে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে এসব আবেদনে স্বাক্ষর শুরু হওয়ায় কমতে শুরু করেছে ফাইলের স্তূপ।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর