দেশে এখন
0

গার্মেন্টস কাঁচামাল ঘোষণায় চট্টগ্রাম বন্দরে এলো ১২ হাজার বোতল বিদেশি মদ

চট্টগ্রাম বন্দরে মিথ্যা ঘোষণায় আনা এক কনটেইনার বিদেশি মদ জব্দ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। পোশাক শিল্পের কাঁচামাল ঘোষণায় আদমজী ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানার নামে ১২ হাজার বোতল বিদেশি মদ আনে অসাধু একটি চক্র। নানা কৌশলে নয় কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চালানটির বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ছিল চক্রটির। তবে কাস্টমস কতৃর্পক্ষের গোয়েন্দা নজরদারিতে খালাসের আগেই ধরা পড়ে।

কনটেইনার খোলার পর বোতলে বোতলে বেরিয়ে আসে জ্যাক ড্যানিয়েল, পাসপোর্ট স্কচ, সিভাস রিগ্যাল, ব্ল্যাক লেবেলসহ স্বনামধন্য বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ। নারায়ণগঞ্জের আদমজী ইপিজেডের সুপ্রিম স্মার্টওয়্যার লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানা ফেব্রিকস ঘোষণা দিয়ে চীন থেকে কনটেইনার ভর্তি ১২ হাজার বোতল মদ নিয়ে আসে।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মদের চালানটি আনলেও এতদিন সেটি বন্দরে ফেলে রেখেছিল তারা। চালান খালাসের জন্য বিল অব এন্ট্রি দাখিল করলেও বিনা বাধায় সেটি বের করে নিতে কৌশল খুঁজছিল তারা। তবে, শেষ রক্ষা হয়নি ধরা পড়ে কাস্টমসের গোয়েন্দা জালে। এই চালানে প্রায় নয় কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা ছিল।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর উপ কমিশনার এ কে এম খায়রুল বাশার বলেন, 'সবমিলে আছে ১১ হাজার ৬৭৮ লিটার মদ আছে। এটার রেভিনিউ আট থেকে নয় কোটি টাকার নিচে হবে না। টোটাল ভ্যালু হিসেব করলে ১৩ থেকে ১৪ কোটি টাকার পণ্য এখানে আছে। তারা সহজভাবে এটাকে বের করতে পারে না। তারা সবসময় সুযোগ খুঁজতে থাকে। কিন্তু আমাদের কাউন্টার সার্ভিসেস থাকে। সেটা ক্রস করতে পারলে তারা এটা বের করতে পারে। আমরা তাদের ক্রস করতে পারলে আমরা তাদের আটক করতে পারি। ফাইনালি আমরা তাদের আটক করতে পেরেছি বলে আটক করতে পেরেছি।'

মদ আমদানি শর্তযুক্ত এবং উচ্চ শুল্কের হওয়ায় পোশাক শিল্পের কাঁচামাল, মেশিনারিজসহ বিভিন্নভাবে আমদানির চেষ্টা করে চোরাকারবারিরা। পোশাক শিল্পের চালান পরীক্ষা নিরীক্ষা কম হওয়ায় এই সুযোগ নেয় তারা। এর আগেও ২০২২ সালে বন্দরের ভেতরে ও বাইরে পাঁচটি মদের চালান ধরা পড়ে। যেখানে কর্মকর্তাদের ইউজার আইডি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সিস্টেমে প্রবেশ করে ইপিজেডের বিভিন্ন শিল্প কারখানার নামে পোশাক শিল্পের অ্যাক্সেসরিজ ঘোষণায় জাল আমদানি সনদে মদের চালান আনে।

যেখানে প্রায় ৫৭ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ৭৭ হাজার লিটার মদ বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ছিল। তবে, গোপন সংবাদ থাকায় চালানটি ধরতে গোয়েন্দা নজরদারি করে কাস্টম কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ফাইজুর রহমান বলেন, 'যেহেতু মদ্যজাতীয় পণ্য হাই ডিউটিয়েবল প্রোডাক্ট সেজন্য হয়তো এটার ডিমান্ড বাজারে বেশি। বাজারে বিক্রি করে লাভ করা যায় বেশি, সেজন্য একটা সংঘবদ্ধ দল এই অপচেষ্টা করে থাকে। এই পণ্য র্দীর্ঘদিন আমাদের ওয়াচে ছিল। সেজন্য তারা এটা বন্দর থেকে নড়াচ্ছিল না বা খালাস করছিল না। এ ধরনের কার্যক্রম আমরা নিয়মিতভাবে করছি।'

এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে চোরাচালান আইনে আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে মামলা হবে।

এসএস