আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

রেকর্ড কনটেইনার ও খোলা পণ্য ওঠানামা হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে

চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ কনটেইনার ও খোলা পণ্য ওঠানামা হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। বছরজুড়ে ডলার সংকট, রাজনৈতিক অস্থিরতার পরও আমদানি-রপ্তানির এমন চিত্রকে ব্যতিক্রম বলছেন ব্যবসায়ীরা। ২০২৪ সালে এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী প্রায় ৩২ লাখ একক কনটেইনার ওঠানামা করেছে, আর খোলা পণ্য খালাস হয় প্রায় ১৩ কোটি টন। এতে তৈরি হয়েছে রেকর্ড আয়ের সম্ভাবনা।

বলা হয়, দেশে বাণিজ্য আর অর্থনীতির গতির চিত্র ধরা পড়ে চট্টগ্রাম বন্দরে। এ বছরের শুরু থেকে আগস্ট পর্যন্ত রাজনৈতিক অস্থিরতা, ডলার সংকটে দেশের অর্থনীতি ছিল প্রায় বিপর্যস্ত। অথচ বন্দরের তথ্য দেখাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। এবার পণ্য আমদানি ও রপ্তানিতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে গেছে চট্টগ্রাম বন্দরের।

২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রেকর্ড ৩২ লাখ ২৫ হাজার কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে চট্টগ্রাম বন্দর, যা গেলো বছরের চেয়ে সোয়া দুই লাখ বেশি। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি প্রায় ছয় শতাংশ। কর্তৃপক্ষের আশা, রেকর্ড পরিমাণ পণ্য ওঠানামায় বৈশ্বিক বন্দরের তালিকায় এগিয়ে যাবে চট্টগ্রাম বন্দর।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, 'অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে আমাদের বন্দরের কর্মকর্তা, কর্মচারী, ইউজারর্স, শ্রমিকরা মানে সবার আন্তরিকতা থাকার কারণে আমরা এবার গতবারের সব রেকর্ড বঙ্গ করে আমাদের এখানে ৩২ লাখ ২৩ হাজার কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিবছরে যে ক্যালেন্ডার ইয়ারে আমরা কনটেইনারের হিসেবটা করি আমরা আশা করছি ৬৭তম অবস্থানে আছি। এবার সেটা আরও কয়েক ধাপ এগোবে।'

শুধু তাই নয় এ বছর খোলা পণ্য যেমন চাল, ডাল, চিনি, সিমেন্ট, ক্লিংকার পরিবহনেও রেকর্ড করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, দক্ষতা বৃদ্ধি ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের সুফল পাচ্ছে বন্দর।

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, 'কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা আছেন তাদের দক্ষতার কারণে এর সাথে ইকুইপমেন্ট সংযোজনের কারণে সবমিলিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্ডিশন আগের মতো নেই। আগে যে জাহাজগুলোর গড় ছিল চার থেকে পাঁচ দিন একটা জাহাজের, পণ্য নামানো থেকে উঠানো সবমিলিয়ে, এখন সেই জাহাজের সময় আড়াই থেকে তিন দিনের মধ্যে চলে আসছে।'

তবে এলসিএল কনটেইনার বন্দরের বাইরে থেকে ডেলিভারি দিলে এবং সহজ শর্তে আরও বেশি বেসরকারি আইসিডি করার সুযোগ দিলে বন্দরের কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে বলে মনে করেন শিপিং এজেন্টরা।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, 'ওয়ান ইলেভেনের পর থেকে যারা কাজ করছে তারা কিন্তু এখনও কাজ করছে। সেটা আইটার এনগেজ বা জেটির ভেতরে কাজ করছে। আমাদের এটাকে ভাঙতে হবে। যেটা এখন বন্দর চেয়ারম্যান বলছে এবং উপদেষ্টা বলছে যে ওপেন টেন্ডার। যখন ওপেন টেন্ডার হবে, কাজের গতি বাড়বে, প্রতিযোগিতা বাড়বে। আমাদের বিশ্বাস এক্সিটিং যে রেট আছে সেটাও কম হবে।'

বন্দরে আসা প্রতি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে প্রায় ৪২ ডলার আয় করে চট্টগ্রাম বন্দর। এছাড়া জাহাজের অবস্থান ভাড়াসহ নানা রকম চার্জ মিলিয়ে বছরে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা আয় হয় বন্দরটির।

এসএস