চট্টগ্রাম বন্দর দেশে এককভাবে রাজস্বের সবচেয়ে বড় যোগানদাতা। এখানে আসা আমদানি রপ্তানি পণ্য থেকে শুল্ক আদায় করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শুল্ক আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা, যেখানে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের আদায়ের লক্ষ্য ৮৩ হাজার কোটি। অর্থাৎ এককভাবে প্রায় ১৭ শতাংশ রাজস্ব জোগান দেয় বন্দর ও কাস্টমস।
এই অর্থবছরের শুরুতে জুলাই বিপ্লব, রাজনৈতিক অস্থিরতা, ডলার সংকটসহ নানা কারণে বিপর্যস্ত ছিল অর্থনীতি ও বাণিজ্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেলো বছরের চাইতে খাদ্যশস্য আমদানি কমেছে সাত শতাংশ, শিল্প কারখানার যন্ত্রপাতি কমেছে ২৫ শতাংশ, চিনি ৩৫ শতাংশ, সার ৩০ শতাংশ, তেল জাতীয় পদার্থ ১৩ শতাংশ।
তবে, আমদানি কমার এমন চিত্রের পরও রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড ভাঙ্গলো চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। গেলো বছরের চেয়ে প্রথম ছয় মাসে দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। তথ্য বলছে, গেলো বছর জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৩ হাজার ৫২১ কোটি টাকা, সেখানে এ বছর হয়েছে ৩৫ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি প্রায় সাত শতাংশ। কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি ও পড়ে থাকা পণ্যের নিলাম বাড়ায় , বেড়েছে রাজস্ব আদায়।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের উপ কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, 'গতবছরে ডিসেম্বর মাসে আমাদের আদতায় ছিল পাঁচ হাজার ১০০ কোটি টাকা। সে হিসেবে আমরা এ বছর আদায় করতে পেরেছি ছয় হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি। শুধু ডিসেম্বর মাসে আমাদের গ্রোথ ২৮ শতাংশের বেশি আছে। আশা করি এভাবে চলতে থাকলে আমরা টার্গেটের কাছাকাছি যেতে পারবো।'
রাজস্ব আদায়ে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বছরের শেষ মাসে। তথ্য বলছে, শুধু ডিসেম্বর মাসেই রাজস্ব আদায় হয়েছে সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৮ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বছরের শেষে ডলার সংকট কমায় আমদানি খানিকটা বেড়েছে।
সি এন্ড এফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, 'এখানে যে বিলোভেন্ট্রিগুলো আসে ওগুলো যদি দিনে দিনে শুল্কায়নের একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করেন কাস্টম হাউস এবং ছোটখাট দেখা যায় যে ত্রুটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ফাইল চালাচালি হয়, এই বিষয়গুলো যদি এড়িয়ে চলে আমার মনে হয় রেভিনিউতে আরও গতি আসবে।'
রাজস্ব আদায় গেলো বছরের চেয়ে বাড়লেও এখনও লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস । প্রথম ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৫ হাজার কোটি টাকা, তার চেয়ে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে আছে দেশে রাজস্ব আদায়ের সবচেয়ে বড় এ প্রতিষ্ঠান।