আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

৬ মাসেও পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে আমদানি পণ্য হ্যান্ডলিং শুরু হয় নি

কাঙ্ক্ষিত মুনাফা পাচ্ছে না বন্দর

চালু হওয়ার ৬ মাসেও চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে আমদানি পণ্য হ্যান্ডলিং শুরু করতে পারেনি টার্মিনাল অপারেটর সৌদি আরবের রেড সি গেইটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল। সাড়ে চার লাখ একক কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতার এই টার্মিনালে সাত মাসে উঠানামা করেছে মাত্র ২৭ হাজার টিইইউএস। এতে কাঙ্ক্ষিত মুনাফা পাচ্ছে না বন্দর। যদিও বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, স্ক্যানার বসলে বাড়বে কনটেইনার হ্যান্ডলিং ও আয়।

চলতি বছর জুনে চট্টগ্রাম বন্দরের নবনির্মিত পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে কাজ শুরু করে প্রথম বিদেশি অপারেটর রেড সি গেইটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল। সাত মাসে মাত্র ৩০টি জাহাজ ভিড়েছে এই টার্মিনালে।

অর্থাৎ মাসে গড়ে চার থেকে ৫টি জাহাজ। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই টার্মিনাল থেকে ২৭ হাজার টিইইউএস রপ্তানি কনটেইনার জাহাজীকরণ হয়। কিন্তু স্ক্যানারের অভাবে এখনো আমদানি পণ্য খালাস করা যাচ্ছে না।

অন্যান্য টার্মিনালে চট্টগ্রাম বন্দর বা কাস্টম কর্তৃপক্ষ স্ক্যানার বসালেও পিসিটিতে কে স্থাপন করবে সেটি নিয়ে জটিলতা ছিল। অবশেষে এনবিআরের অনুমোদন পেয়ে নিজস্ব অর্থেই স্ক্যানার বসাচ্ছে আরএসজিটি। তবে এখনো পূর্ণাঙ্গ বন্ড লাইসেন্স পায়নি এই বিদেশি অপারেটর।

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোটস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার বিপ্লব বলেন, ‘পিসিটি এখনো আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার হ্যান্ডলিং করতে পারছে না। আমাদের তথ্যমতে পিসিটিকে এখনো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে বন্ড লাইসেন্স প্রদান করা হয় নি। আরেকটা বিষয় হচ্ছে পিসিটিতে এখনো কোনো কনটেইনার স্ক্যানার স্থাপন করা হয় নি।’

কর্ণফুলী নদীর মোহনা থেকে পিসিটির অবস্থান মাত্র ছয় কিলোমিটার। এতে জাহাজ ভিড়তে সময় ও ব্যয় দুটোই কম লাগে। তাই পুরোদমে চালু হলে এই টার্মিনালটি পণ্য পরিবহন ব্যয় ও বন্দরের ওপর চাপ কমাবে বলে আশাবাদী বন্দর ব্যবহারকারীরা।

কিন্তু প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি না আসায় এবং কাস্টমসের অনুমোদন জটিলতায় সেই সুযোগ কাজে লাগছে না।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ‘বিদেশি কোম্পানি, তাদের আধুনিক যন্ত্রপাতি, তাদের অভিজ্ঞ অপারেটর এটা আমাদের জন্য এবং যারা বর্তমানে কাজ করছে তাদের জন্য একটা প্রতিযোগিতা হয়ে উঠবে। এবং সামগ্রিকভাবে এটা আমাদের বন্দরের পারফরম্যান্সকে বাড়াবে।’

আরএসজিটির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী প্রতি কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ১৮ ডলার পায় বন্দর। এক্ষেত্রে হ্যান্ডলিং কম হওয়ায় বন্দরের আয় কম হচ্ছে। যদিও বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, স্ক্যানার বসলে আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে আমদানি কনটেইনারও ডেলিভারি দেয়া হবে পিসিটি থেকে।

প্রস্তুতি পর্ব শেষে তৃতীয় বছর থেকে যে পরিমাণ হ্যান্ডলিং হোক আড়াই লাখ টিইইউএস হ্যান্ডলিংয়ের অর্থ দিতে হবে বন্দরকে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘আগামী এক দুই মাসের মধ্যে তারা কাস্টমসের এ শর্তাদি পূরণ করে আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার হ্যান্ডলিং শুরু করতে পারবে। প্রিপারেশন টাইম তিন বছর শেষ হলেই আমরা তাদের হ্যান্ডলিং যাই হোক না কেন আড়াই লাখ টিইইউএসের বিপরীতে আমাদের হিস্যাটা পাব।’

২০২২ সালের জুনে ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ২০২৩ এর ডিসেম্বরে টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য আরএসজিটির সাথে ২২ বছরের চুক্তি করে চট্টগ্রাম বন্দর।

এএইচ