শিক্ষা থেকে বিজ্ঞান- কর্মী ছাঁটাই আর বরাদ্দ কমানোর মিশন নিয়ে এক সেক্টর থেকে অন্য সেক্টরে ছুটছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গেল ফেব্রুয়ারির ২৭ তারিখ আবহাওয়া দপ্তরের ৮শ'র বেশি কর্মীকে একদিনের নোটিশে চাকরিচ্যুত করেছে বর্তমান প্রশাসন।
বিশেষ করে গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে বরাদ্দ কমানোয় চটেছেন ক্যালিফোর্নিয়াবাসী। এরই জেরে সম্প্রতি স্যান ফ্রান্সিসকো শহরে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার কর্মী।
একজন বলেন, ‘আমার সহকর্মীদের সাথে যা করা হচ্ছে তা অমানবিক। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এরপর আবার টেড ক্রুজ এনএফএসে বাজেট দুই তৃতীয়াংশ কমানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন।’
আরেকজন বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসনের কারণে উদ্ভাবন সেক্টর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি।’
ক্ষমতায় আসার পর মার্কিন উদ্ভাবকদের বিশ্বব্যাপী জলবায়ু মূল্যায়ন সংক্রান্ত সভায় যোগদানের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন ট্রাম্প। ছাটাই করেছেন ন্যাশনাল ফুড ইন্সটিটিউট অ্যান্ড এগ্রিকালচারের অসংখ্য কর্মীকে।
এমন প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজার নিয়ে উদ্বেগজনক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য ইকোনোমিস্ট। সেখানে বলা হচ্ছে গেল ফেব্রুয়ারিতে দেড় লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হলেও এই সংখ্যা ইঙ্গিত করে মার্কিন শ্রমবাজারে ভাটা পড়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় গেল মাসে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ১ শতাংশে। সিবিএস নিউজ জানায়, গেল ডিসেম্বরে ৩ লাখ ২৩ হাজার নতুন চাকরির সুযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরই শ্রমবাজারে ভাটা পড়ে। ২০২৫ এর শুরুতেও এর রেশ অব্যাহত আছে।
এদিকে, মন্দার শঙ্কায় থাকা মার্কিন অর্থনীতি চাঙ্গা করতে সুদের হার বাড়ানোর বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ার জেনোম পাওয়েল বলেছেন, কর্মসংস্থান কমে গেলেও, দ্রব্যমূল্য এখনও স্থিতিশীল আছে। তবে, বাণিজ্য, অভিবাসন, রাজস্ব ও মুদ্রানীতিতে নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে বর্তমান প্রশাসনের।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ার জেনোম পাওয়েল বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ২০২২ এর মাঝামাঝিতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির হার ৭ শতাংশে পৌঁছেছিল, সেখান থেকে আমরা সরে এসেছি। অথচ সেই হারে কর্মসংস্থান বাড়েনি। এটা ঐতিহাসিকভাবে বিরল ঘটনা।’
১৮ ও ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম দুই মাসে মুদ্রাস্ফীতি, কর্মসংস্থান, প্রবৃদ্ধি এবং সুদের হার সংক্রান্ত প্রতিবেদন হাজির করবেন মার্কিন নীতিনির্ধারকরা। তবে, সুদের হার ৪ দশমিক দুই পাঁচ শতাংশ থেকে চার দশমিক পাঁচ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখার পরিকল্পনায় বদল আনতে চায় না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।