ইসরাইলি বর্বরতায় শৈশব হারিয়েছে গাজার শিশুরা

মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

আবারো শুরু হয়েছে যুদ্ধ। আবারো চলছে নির্বিচারে নারী ও শিশু হত্যা। ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরতা আর নিষ্ঠুরতার সব মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় স্বজনদের পাশাপাশি শৈশব হারিয়েছে শিশুরাও। উপত্যকার অর্ধেক শিশুই এ থেকে পরিত্রাণের জন্য কামনা করছে নিজের মৃত্যু।

‘মা আমি ক্লান্ত। আমি মরে যেতে চাই।’ চিরুনি দিয়ে চুল আচড়াতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হয়ে ঠিক এভাবেই নিজের মৃত্যু কামনা করছিল শিশু সামা তুবেইল। আয়নায় তাকাতেই চোখ দিয়ে অঝোরে ঝড়ছে পানি।

সামা তুবেইল বলেন, ‘মাকে জিজ্ঞেস করি বাকি জীবন আমার কী এভাবেই চুল ছাড়া থাকতে হবে? আমি মরে যেতে চাই। আর বেহেশতে গিয়ে আবারও নিজের বড় চুল দেখবো।’

অথচ যুদ্ধ শুরুর আগে শিশুটির ছিল মাথাভর্তি ঘন চুল। তাহলে হঠাৎ কেন এমন পরিস্থিতি?

চিকিৎসকরা জানান, গেল বছর আগস্টে রাফায় প্রতিবেশির বাড়িতে বিমান হামলার পর নার্ভাস শকের শিকার হন তুবেইল। এছাড়াও ১৫ মাসের যুদ্ধে শরীরে বাসা বেঁধেছে অ্যালোপেকিয়া। যার কারণে চুলের পাশাপাশি শৈশবও হারিয়েছে শিশুটি।

ইউনিসেফের তথ্য বলছে, উপত্যকার ১২ লাখ শিশুর মধ্যে প্রায় সবারই কম বেশি ভুগছেন মানসিক সমস্যায়। গাজার শিশুদের ওপর জরিপ চালিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার চাইল্ড। যেখানে দেখা যায়, যুদ্ধ থেকে মুক্তি পেতে নিজের মৃত্যু কামনা করেছেন উপত্যকার অর্ধেক শিশু।

অথচ এত কিছুর পরও নারী ও শিশুদের নিশ্চিহ্ন করতে ব্যস্ত নেতানিয়াহু বাহিনী। যুদ্ধবিরতি ভেঙ্গে গেল মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সেহেরির সময় সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরাইল। এতে নিহত প্রায় সাড়ে ৪শ' ফিলিস্তিনির মধ্যে অর্ধেকই ছিল নারী ও শিশু। তবে আইডিএফের দাবি, হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল হামাসের সন্ত্রাসী স্থাপনা। সদ্যজাত শিশুও কী সেই কথিত সন্ত্রাসীদের অংশ কি না, সে প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি এখনও।

জাতিসংঘ অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা অ্যালবানিজ বলেন, ‘ইসরাইল ইতোমধ্যে সমস্ত গাজাবাসীকে অঞ্চল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর অর্থ আগ্রাসন অব্যাহত থাকবে। এই সামরিক কৌশলটি গাজাবাসীকে নির্মূল করার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। বার্তাটি হলো, যারা স্বেচ্ছায় উপত্যকা ছাড়বে না, তাদের জন্য এমন পরিণতিই অপেক্ষা করছে।’

বিশ্লেষকদের ধারণা, রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে দীর্ঘায়িত করার লক্ষ্যে আবারও যুদ্ধ শুরু করেছেন নেতানিয়াহু। যার শরীরে লেগে আছে প্রায় ৫০ হাজার গাজাবাসীর রক্ত।

এসএস