সংকট পিছু ছাড়ছে না গাজাবাসীর। ইসরাইলি অভিযানে দিশেহারা ফিলিস্তিনিদের কাছে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে আঘাত হানছে একের পর এক শীতকালীন ঝড়, বন্যা।
যুদ্ধে ঘরবাড়ি হারিয়ে এমনিতেই অনিরাপদ তাঁবু ও ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে আশ্রয় হয়েছে ফিলিস্তিনিদের। ঝড় আর বন্যায় সেগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নিরাপদ স্থানের সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকের ঠাঁই হয়েছে ঝড়ে আংশিক ধসে পড়ে ভবনে। অনেকে আবার অনিরাপদ তাঁবুতেই কোনোরকমে দিন পার করছেন।
গাজাবাসীদের একজন বলেন, ‘দেখতেই পাচ্ছেন, শীতকালীন ঝড়ে তাঁবুগুলোর অবস্থা। যদিও আমরা চারদিক থেকে আটকে রাখার চেষ্টা করি, কিন্তু কোনো কাজে আসে না। টানা বৃষ্টিতে বালু আর পানিতে তলিয়ে যায় চারপাশ।’
যদিও এমন চিত্র গাজায় এখন খুবই স্বাভাবিক। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো তলিয়ে আছে পানিতে, ধসে পড়েছে ভবন। এসব ভবনের নিচে চাপা পড়েছেন অনেকে। যন্ত্রপাতির অভাবে তাদের উদ্ধার করাও সম্ভব হচ্ছে না। চলমান ভয়াবহ মানবিক সংকট ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
অন্য আরেকজন বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশীর বাড়িটি পুরোপুরি ধসে পড়েছে এবং তারা সবাই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে। বাড়িটি বসবাসের অনুপযোগী হলেও বাধ্য হয়ে তারা সেখানে ছিলেন। এ তাঁবুগুলো একেবারেই অনুপযুক্ত—এক ঝাপটা বাতাসই এগুলো ভেঙে পড়ার জন্য যথেষ্ট।’
উপযুক্ত বাসস্থানের অভাবে বৃষ্টি ও ঠান্ডা থেকে বাঁচতে বাসিন্দারা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনের যেটুকু অবশিষ্ট আছে, সেখানেই আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার নাজুক অবকাঠামো এ শীতকালীন ঝড়ের প্রভাবে আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। তীব্র শীতে বেশি জরুরি তাঁবু, ভারি বস্ত্রসহ অন্যান্য মানবিক সহায়তা। কিন্তু ইসরাইলের অবরোধের কারণে তা গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না। যা সংকটকে আরও তীব্র করে তুলছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু সহায়তা গাজায় পৌঁছালেও শীতকালীন প্রয়োজনীয় বিপুল পরিমাণ সামগ্রী এখনও ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত সীমান্ত ক্রসিংগুলোতে আটকে আছে বা বিলম্বিত হচ্ছে, ফলে সময়মতো সরবরাহ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
যুদ্ধ, অবরোধ আর মানবিক সংকটের ওপর শীতকালীন ঝড়। এতোকিছুর মাঝেই চলছে বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীর একটু বেঁচে থাকার প্রয়াস।





