বুধবার (১৯ মার্চ) সূর্যাস্তের সময় ইসরাইলি ট্যাংকারের বহর প্রবেশ করে গাজায়। সূর্যের আলো নেভার সঙ্গে সঙ্গে অন্ধকার তীব্র হয় এখানকার ফিলিস্তিনিদের জীবনেও।
বুধবার রাত থেকে বিমান হামলার পাশাপাশি গাজায় পুরোদমে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরাইলি সেনারা। উপত্যকাটির কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণাঞ্চলে চলে এ অভিযান। এতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। যার মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।
সাধারণ ফিলিস্তিনিদের হত্যার পাশাপাশি জাতিসংঘের কর্মীদেরও ছাড় দিচ্ছে না দখলদার ইহুদিরা। বুধবার গাজায় জাতিসংঘ প্রাঙ্গণ হিসেবে পরিচিত 'দেইর আল বালাহ' অঞ্চলেও বিমান হামলা চালায় তারা। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। অবশ্য বিষয়টিকে অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে ইসরাইলি সেনা।
জাতিসংঘের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, 'দেইর আল বালাহ অঞ্চলে জাতিসংঘের দুটি গেস্ট হাউসে বিমান হামলা করেছে ইসরাইল। সংস্থাটির কর্মীরা হতাহত হয়েছেন। এতে অত্যন্ত শোকাহত হয়েছেন মহাসচিব।'
গাজায় অভিযান চালানোর পাশাপাশি পুনরায় নেতজারিম কোরিডর দখলে নিয়েছে আইডিএফ। এতে আবারও বিভক্ত হয়ে পড়েছে উপত্যকাটি। চাইলেই দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলের মানুষ অবাধে যাতায়াত করতে পারবে না এই কোরিডর দিয়ে।
এদিকে বুধবার ফিলিস্তিনিদের নিরাপদে সরে যেতে ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল। যদিও কারোই জানা নেই আসলে কোথায় গেলে জীবন বাঁচাতে পারবেন তারা।
ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একজন বলেন, 'এর শেষ কোথায়। আর কত বার এদিক সেদিক ছোটাছুটি করবো। এ নিয়ে ১০ বার জায়গা পরিবর্তন করেছি। বেইত হানুম থেকে দেইর আল বালাহ। সেখান থেকে রাফা। আর পারছি না।'
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, 'রোজা রেখে ইফতার ও সেহরি করার পয়সাও নেই। সব অর্থ বাড়ি ভাড়ায় খরচ হয়ে গেছে। দুনিয়ায় দয়া বলতে কী কিছু নেই? ইসরাইলিরা আমাদের সন্তানদের হত্যা করছে। আর কিছুই বাকী নেই জীবনে।'
হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে পুনরায় যুদ্ধবিরতি চালু করতে মধ্যস্ততায় নেমেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। বুধবার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তিনি। নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে পোস্ট করেন ম্যাক্রোঁ।
এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে তেল আবিব ও জেরুজালেমে। সেসময় বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় বিক্ষোভে ফেঁটে পড়েন তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জলকামান ছোঁড়ে ইসরাইলি পুলিশ।
তেল আবিব ছাড়াও গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধে বিক্ষোভ হয়েছে দেশে দেশে।