ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী যখন ৬০ দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন তখন থেকেই এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে বিশ্বস্ততার প্রশ্নে হিজবুল্লাহ বা ইসরাইল কাউকেই ভরসা করা যায় না এমন মন্তব্যও করেন তারা। বৃহস্পতিবারও (২৯ নভেম্বর) একে অন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ এনে, বিশ্লেষকদের আশঙ্কাকে সত্য প্রমাণ করতে মরিয়া উভয়পক্ষের যোদ্ধারা।
মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রধান ও মূল সমস্যা সমঝোতার শর্ত ভঙ্গ। ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলের গুদামে রকেট হামলায় হিজবুল্লাহ'র সম্পৃক্ততা ছিল- নেতানিয়াহু প্রশাসনের এমন অভিযোগ প্রমাণ হলে, বলাই যায় হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতির শর্ত মানছে না। একইদিনে, ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিরুদ্ধে লেবাননের দক্ষিণে হামলার অভিযোগ আসায়, এটি এক প্রকার পরিষ্কার শর্ত মানতে পারছে না কোনো পক্ষই।
ইসরাইল বা হিজবুল্লাহ কোনো পক্ষই কাউকে বিশ্বাস করে না। বিশ্বাসযোগ্যতার অভাবও এই যুদ্ধবিরতি কার্যকরে অন্যতম প্রধান অন্তরায় হতে যাচ্ছে এমনটাই ভাবছেন মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া যুদ্ধক্ষেত্রের সবশেষ তথ্য পর্যালোচনার জন্য লেবানিজ সেনাবাহিনীকে কতটা বিশ্বাস করবেন নেতানিয়াহু সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ শুরু থেকেই জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাসহ অন্যান্য অলাভজনক এজেন্সির তথ্য নিয়ে সংশয় জানাচ্ছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।
এছাড়া হিজবুল্লাহ তার সাংগঠনিক সক্ষমতা ও তৎপরতা বাড়াতে গিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবাননের বাসিন্দাদের বিপাকে ফেলতে পারে এমন আশঙ্কাও করছেন বিশ্লেষকরা।
এছাড়া বহির্বিশ্বের রাজনৈতিক চাপ, মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ও ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতিতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এমন শঙ্কাও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে ইয়েমেনের হুথি বা ফিলিস্তিনের হামাসের তৎপরতার ওপরেও এই যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।