ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

‘ইউক্রেনের দখলকৃত এলাকা পুনর্দখলে কোনো সাহায্য করবে না যুক্তরাষ্ট্র’

ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে সহযোগিতা করা হলেও রাশিয়ার দখলে যাওয়া এলাকা ফিরে পেতে যুক্তরাষ্ট্র কোন সহযোগিতা করবে না। এমনটাই জানিয়েছেন ট্রাম্পের উপদেষ্টা। এদিকে, রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে দ্রুতই রুশ সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে নামছে উত্তর কোরিয়ার সেনারা। যদিও ঠিক কোন স্বার্থে মস্কোকে তরুণ, অনভিজ্ঞ এত সেনা দিয়ে দিল, তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এদিকে এই সেনাবহর সামলাতে নতুন করে কিয়েভ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে, এমনটাই বলছেন ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।

ইউক্রেনে রাশিয়া সেনা অভিযান শুরু করে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ঠিক তখন থেকেই কিয়েভের পাশে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা অনেক দেশ। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মতো এত সামরিক সহযোগিতা করেনি কোনো দেশই। তাইতো ওয়াশিংটনের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল জেলেনস্কি প্রশাসন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সামরিক সহায়তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। বিশ্লেষকরা বহু আগে থেকেই বলে আসছিলেন, ট্রাম্প জিতলে বাইডেনের গতিতে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেবেন না।

একই বার্তা ট্রাম্প না দিলেও দিলেন তার উপদেষ্টা। জানালেন, ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে বেদখল হওয়া কোনো স্থানই পুনর্দখল করতে ইউক্রেনকে সাহায্য করবে না যুক্তরাষ্ট্র। তবে দেশে শান্তি ফেরাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে ওয়াশিংটন। এরমধ্যে ইউক্রেনের সম্মুখসারিতে হামলা করে প্রায় ৩শ ড্রোন ভূপাতিত করে নতুন স্থাপনা দখলের দাবি করেছে মস্কো।

এমন অবস্থায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন আবার ইউক্রেনকে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে নিরবচ্ছিন্ন সামরিক সহায়তার। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি জোসেফ বরিল জানান, ইউক্রেনে সহযোগিতা আগের মতোই থাকবে। এখন পর্যন্ত দেশটিকে ১৩ হাজার কোটি ডলার দেয়া হয়েছে এই জোটের পক্ষ থেকে। তবে স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ দেয়া গেলেও ন্যাটোর সদস্যপদ দেয়া যাবে না, কারণ তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে।’

ইইউ পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি জোসেফ বোরেল বলেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে যাব আমরা। কিন্তু প্রক্রিয়াটা আরও দ্রুত সময়ের মধ্যে হওয়া উচিত। প্রতিদিন এই আলোচনা করেই সময় নষ্ট করছি ইউক্রেনকে কতটুকু সহায়তা দেবো। নির্বাচনের প্রভাব শুধু ইউক্রেন যুদ্ধে না পুরো বিশ্বে পড়েছে। কিন্তু ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সহযোগিতা করতে হবে।’

এরমধ্যেই ইউক্রেনের শীর্ষ সেনা কমান্ডার ওলেক্সান্ডার সিরস্কি জানিয়েছেন, শিগগিরই রাশিয়ার সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে নামছে উত্তর কোরিয়ার সেনারা। নতুন এই সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে ইউক্রেনের সেনারা। পাশাপাশি আভাস পাচ্ছে রাশিয়ার বড় পরিসরে হামলার।

কিন্তু সংবাদ মাধ্যম সিএনএনের বিশ্লেষণ বলছে, রাশিয়াতে উত্তর কোরিয়া অনভিজ্ঞ আর কম বয়সী সেনা পাঠিয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সেনারা যে এখন রাশিয়াতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, এটা শতভাগ নিশ্চিত হয়ে বলছে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া আর ব্রিটেন। এরমধ্যে কুরস্কে সবচেয়ে বেশি সেনা উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। যেখানে পুতিন কিছুদিন আগেও কিয়েভের কাছে কোণঠাসা ছিল।

নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যস্ত দেশ উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন মূলত দেশের স্বার্থেই রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে তারা বলছেন, এই বন্ধুত্বের মধ্য দিয়ে উত্তর-পূর্ব এশিয়াতে বড় পরিসরে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে দুই পরাশক্তিধর দেশ।

দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, উত্তর কোরিয়ার প্রত্যেক সেনাকে মাসে ২ হাজার ডলার করে দেবে মস্কো। ১০ হাজার সেনার জন্য মাসের বরাদ্দ ২ কোটি ডলার। উত্তর কোরিয়ার সাবেক সেনা কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে থেকে যে আয় করতেন সেনারা, এখন তার ৯৫ শতাংশ বেশি আয় করবেন। তাই ঝুঁকি নিয়ে অপরিচিত দেশে পাড়ি জমিয়েছেন তারা।

এএম