অবশেষে প্রেসিডেন্ট প্যালেসের সঙ্গে রাজধানী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে সুদানের সেনাবাহিনী। প্রায় দুই বছরের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধে আধা সামরিক বাহিনী আরএসএফের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় অর্জন এটি।
বিজয়ের এই ক্ষণে সেনাপ্রধানকে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে বরণ করে নেন সুদানিজরা। রিপাবলিকান প্যালেসের সামনে তাৎক্ষণিক ভাষণে আল বুরহান জানান, পবিত্র রমজান মাসের এই বিজয় সুদানকে নতুন করে স্বাধীনতার পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে বিজয় অর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।
সুদান সেনাবাহিনীর প্রধান আব্দেল ফাত্তাহ আল বুরহান বলেন, ‘রমজান মাসের এই বিজয় আমাদের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে। আমরা পিছু হটবো না। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবো। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, শেষ পর্যন্ত লড়াই অব্যাহত রেখে আমরা সুদানের স্বাধীনতা নিশ্চিত করবো।’
তবে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের নিয়ন্ত্রণ হারালেও লড়াই শেষ হয়নি বলে বিবৃতি দিয়েছে আরএসএফ। আধা সামরিক বাহিনীটির দাবি, প্রাসাদের বাইরেই অবস্থান করছে আরএসএফ এর সেনারা।
ইতোমধ্যে আকস্মিক হামলায় হত্যা করা হয়েছে বুরহানের কয়েকজন সদস্যকে। সেনাবাহিনীর সূত্র জানিয়েছে, ড্রোন হামলায় সেনাসদস্যসহ প্রাণ হারিয়েছে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। এ খবর সম্প্রচারের সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সুদান টিভির উপস্থাপক।
তবে কৌশলগত এই জয়ে এখনই গৃহযুদ্ধের অবসান হচ্ছে না বলে মত বিশ্লেষকদের। সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দার্ফুর অঞ্চল বর্তমানে আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে। রাজধানীতেও ছড়িয়ে রয়েছে মোহাম্মাদ হামদান দাগালোর সেনারা। ক্ষমতার এই লড়াইয়ে দেশটি দুইভাগে বিভক্তের শঙ্কা প্রকট হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর সুদানের ক্ষমতায় বসে সেনাবাহিনী। যেখানে বড় ভূমিকা পালন করেন সেনাপ্রধান আল বুরহান ও আরএসএফ প্রধান হামদান দাগালো। তবে আধা সামরিক বাহিনীর ১ লাখ সদস্যকে সামরিক বাহিনীতে একীভূত করার পদক্ষেপের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধ শুরু করে আরএসএফ। জাতিসংঘের তথ্য বলছে রক্তক্ষয়ী এই যুদ্ধে দেড় লাখের বেশি প্রাণহানির পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় দেড় কোটি মানুষ।