ইসরাইলি হামলায় ২৪ ফিলিস্তিনির মৃত্যু; যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ চেয়েছে হামাস

ইসরাইলের হামলা অব্যাহত
ইসরাইলের হামলা অব্যাহত | ছবি: সংগৃহীত
0

যুদ্ধবিরতির ৬ষ্ঠ সপ্তাহে এসে ভয়ংকর এক রাতের সাক্ষী হলেন গাজাবাসী। গতকাল (শনিবার, ২২ নভেম্বর) এক দিনের ব্যবধানে আইডিএফের বিমান হামলায় প্রাণ গেল অন্তত ২৪ জনের। যদিও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর অফিস দাবি করছে, এ হামলায় হামাসের পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তা নিহত হয়েছে। এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ চেয়েছে হামাস।

গেল ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর কেটে গেছে ছয় সপ্তাহ। এই ৪২ দিনের মধ্যে উপত্যকার সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী রাত ছিলো গতকাল । তবে, মধ্যপ্রাচ্য নয়, এমন খবর প্রকাশ করেছে খোদ তেল আবিবের গণমাধ্যম, টাইমস অব ইসরাইল।

কতটা ভয়ংকর ছিল সেই রাত। কেমন রক্তপাত দেখলেন গাজাবাসী তার কিছুটা আভাস মিলেছে আল-শিফা হাসপাতালে। জরুরি বিভাগে রোগীর ঢল, পরিবারের ছোটাছুটি, আর চিকিৎসকের অসহায়ত্ব। এসব দৃশ্যই বলে দেয়, এক রাতের ব্যবধানে আবারও মর্গে পরিণত হয়েছে গাজার সচল এ স্বাস্থ্যকেন্দ্র।

গাজার বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘বাড়িতে বসে ছিলাম। আচমকাই আমার প্রতিবেশীর বাড়িতে মিশাইল হামলা হয়। আহতদের নিয়ে এখানে ছুটে এসেছি। কোথায় থেকে কি হলো কিছুই বুঝতে পারছি না।’

শনিবার রাতে হামলা হয়েছে দক্ষিণ ও মধ্য গাজায়, বাদ পড়েনি নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে। গাজার মূল শহরের রেমাল ও দেইর আল বালায় ভিন্ন ভিন্ন হামলায় মারা গেছেন অনেকে। গাজার সিভিল ডিফেন্স বলছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় প্রাণ গেছে তিন শতাধিক ফিলিস্তিনির, আহত প্রায় ৮০০। আর আল জাজিরার প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, ১০ অক্টোবর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় পাঁচশো বার অস্ত্রবিরতির শর্ত ভঙ্গ করেছে ইসরাইল।

যদিও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর অফিস বলছে ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, শনিবার আইডিএফ সেনাদের লক্ষ্য করে অতর্কিত হামলা চালায় এক ফিলিস্তিনি অস্ত্রধারী। এর জেরেই এদিন গাজায় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালায় ইসরাইলি সেনারা। এতে হামাসের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে দাবি তাদের। টাইমস অব ইসরাইলের দাবি, এ অভিযানে ইসরাইলকে সহায়তা করেছে ওয়াশিংটন।

আরও পড়ুন:

এমন পরিস্থিতিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখতে যুক্তরাষ্ট্রসহ কাতার ও মিশরের হস্তক্ষেপ দাবি করছে হামাস। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এ সংগঠনটির অভিযোগ, তাদের যোদ্ধারা আইডিএফ সেনাদের লক্ষ্য করে হামলা করছে, এ ধরণের মিথ্যা তথ্য সাজিয়ে যুদ্ধবিরতি ভেস্তে দিতে চান নেতানিয়াহু।

যদিও, হামাস বিরোধী অভিযান চালিয়ে নিজ দেশে জনগণকে চুপ করাতে পারছেন না নেতানিয়াহু। এতদিন তেল আবিবের বিক্ষোভের মূল দাবি ছিল, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা। কিন্তু সেই পরিস্থিতি বদলেছে।

ইসরাইলি বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ‘কিছু প্রশ্নের উত্তর চাই। তাই এখানে এসেছি। সেদিন কি হয়েছিলো? কেই আমাদের বাঁচাতে আসেনি। যখন আমার মেয়েকে ধরে নিয়ে যাওয়া হলো, সেনাবাহিনীরা কোথায় ছিলো।’

শনিবার নেতানিয়াহু প্রশাসনের গাজার যুদ্ধনীতির সমালোচনা করে স্লোগান দিয়েছেন খোদ ইসরাইলিরাই। তাদের দাবি ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলার ঘটনাপ্রবাহ এবং ইসরাইলি প্রশাসনের ভূমিকা রাষ্ট্রীয়ভাবে তদন্ত করা উচিৎ।

এফএস