পুষ্টিগুণে ভরপুর সুষম খাদ্য ডিম। স্বাস্থ্যকর খাবারটি সুপার ফুড হিসেবেও পরিচিত। স্বল্পমূল্যের কারণে অধিকাংশ মানুষের খাদ্যাভাসের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে রয়েছে এই সুষম খাবার। তবে যুক্তরাষ্ট্রে পরিস্থিতি পুরোটাই উল্টো।
আটলান্টিক পাড়ে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গেছে ডিমের বাজার। বর্তমানে দেশটিতে প্রতি ডজন মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪.৯৫ ডলার বা ৬০০টাকায়। অর্থাৎ দামের দিক থেকে একেকটি ডিম হাঁকিয়েছে অর্ধশতক। কিছু অঞ্চলে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১০ ডলার বা ১২শ' টাকার বেশি।
অস্বাভাবিক এই দাম বাড়ার পেছনে বার্ড ফ্লুকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। শুধু গেল বছরই দেশটিতে এভিয়ান ফ্লু এর সংক্রমণে মারা গেছে ৪ কোটির বেশি মুরগি। ২০২২ সাল থেকে সংক্রামক রোগটির প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ায় সরকারের নির্দেশে প্রায় ১৫ কোটি মুরগি ও হাঁসকে নিধন করতে হয়েছে। যার মধ্যে গেলে জানুয়ারিতে এর সংখ্যা ছিল ২ কোটির বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বার্ড ফ্লু নিয়ন্ত্রণে না আসায় ভোক্তাদের চাহিদা থাকলেও জোগানে তৈরি হয়েছে সংকট।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি। বার্ড ফ্লু খুবই মারাত্মক বিষয়। এজন্য দাম বাড়ছে।’
আরেকজন বলেন, ‘আমরা পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করি। তবে পণ্যের বাড়তি মূল্যের জন্য অর্থ পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের বাজার বিশেষজ্ঞ ম্যাট সুটন ভার্মিউলেন বলেন, ‘চাহিদা ও জোগানের সম্পর্কের কারণে ডিমের দাম বাড়ছে। তাই চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরবরাহে চাপ পড়ছে। তবে জোগান বাড়ার কোনো লক্ষণই নেই। এজন্য ডিমের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে।’
ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১০টি অঙ্গরাজ্যে খাঁচায় আবদ্ধ মুরগির ডিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যা সংকটকে আরো ঘনীভূত করছে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি দপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, চলতি বছর ডিমের দাম বাড়তে পারে ২০ শতাংশ। তাই বার্ড ফ্লু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রোগাক্রান্ত ও বয়স্ক মুরগি অপসারণের ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যা বাস্তবায়নে লেগে যেতে পারে আরো ৩ থেকে ৬ মাস।