দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যু ও ক্ষুধার মিছিল!
সীমান্ত বন্ধ রেখে, ইসরাইলি বাহিনী সবদিক দিয়ে হামলার মাত্রা বাড়ানোয় এমন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে গাজার মানবিক সংকট। বোমা মেরে স্কুল, আশ্রয়কেন্দ্র, রান্নাঘর এবং খাদ্য গুদামগুলো উড়িয়ে দেয়ায় হতাহতের তালিকা যেমন দীর্ঘ হচ্ছে, তেমনি তীব্র হচ্ছে ক্ষুধার যন্ত্রণা।
গাজায় স্থানীয়ভাবে বসবাসকারীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এক টুকরো রুটি এবং এক প্লেট খাবারের আশায় দাতব্য সংস্থার রান্নাঘরে এসেছিলাম। আমরা সমগ্র বিশ্বকে আমাদের পাশে দাঁড়ানোর এবং ইসরাইলকে সীমান্ত খুলতে বাধ্য করার আহ্বান জানাচ্ছি। যাতে আমরা বেঁচে থাকতে পারি, শিশুরা বাঁচতে পারে।’
হামাসের হাতে থাকা সব জিম্মির এক সঙ্গে মুক্তির অজুহাতে ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি শর্ত লঙ্ঘনের পর এভাবেই হত্যা আর ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরাইল। গর্ভবতী নারী থেকে শুরু করে অবুঝ শিশু, গাজার কোনো বাসিন্দাকেই রেহাই দিচ্ছে না তারা। জাতিসংঘের তথ্য বলছে, প্রতিদিন ইসরাইলি হামলায় অন্তত গাজায় একশ শিশু হতাহতের শিকার হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমার গর্ভবতী বোনটা স্বামীসহ হত্যার শিকার হলো। বোনটা সন্তানের জন্মের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এগুলো অনাগত সন্তানের পোশাক।’
সামরিক অভিযান জোরদার করে বন্দিদের মুক্ত করার খায়েশও নেতানিয়াহুর পূরণ হবে না, বরং জিম্মিদের অনিশ্চিত ভাগ্যের দিকে ঠেলে দেয়ার জন্য নেতানিয়াহু সম্পূর্ণ দায়বদ্ধ হবে বলে হুশিয়ার করেছে হামাস। ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ককে আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছে ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংস্থা কাউন্সিল।
এদিকে ইয়েমেনের হুতি-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোয় হামলা অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি গাজার বেসামরিক মানুষকে নির্বিচারে হত্যা ও মানবিক সংকট ঘনীভূত করার পরও ইসরাইলের প্রতি পূর্ণ সমর্থনের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। এরইমধ্যে হাঙ্গেরি সফর শেষে নেতানিয়াহু সোমবার ওয়াশিংটন সফর করবেন বলে খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
গাজার পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীরে দখলদারিত্ব অভিযান বাড়িয়েছে ইসরাইল। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১৯২ শিশুসহ কমপক্ষে ৯৫২ জন নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে সাড়ে ১৫ হাজার ফিলিস্তিনিকে।