হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ শুরুর কয়েকদিন পর থেকেই গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে আসছে জাতিসংঘ। শুরুতে জাতিসংঘের এ প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ ভেটো দিলেও সময়ের সঙ্গে উপত্যকাটিতে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে তৎপর হয়ে উঠেছে খোদ ওয়াশিংটন। বিশেষ করে রাফায় ইসরাইলি অভিযান শুরুর পর এর মাত্রা বেড়েছে কয়েক গুণ।
সোমবার আবারও গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে প্রস্তাব পেশ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। যেখানে তিনটি ধাপে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়। এই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ১৫ সদস্যের ১৪ টি দেশ। ভেটো দিয়েছে কেবল রাশিয়া।
আশার কথা হলো, জাতিসংঘের এই উদ্যোগটি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। গোষ্ঠীটির জৈষ্ঠ্য নেতা আবু জোহরি বলেন, 'হামাস যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্ততাকারীদের সহায়তা করবে।'
হামাসের ইতিবাচক এই মনোভাবে আশার আলো দেখতে পেয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, 'গাজার মানুষের মুক্তির জন্য জরুরীভিত্তিতে সেখানে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে চাই । ফিলিস্তিনিদের আবারও উত্তরাঞ্চলে ফিরিয়ে আনা হবে। একই সঙ্গে ইসরাইলের নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টিও মাথায় থাকবে।'
হামাসের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব মেনে নেয়া হলেও ইসরাইল এতে কতটুকু সাড়া দেয় তাই এখন মূল প্রশ্ন। ওয়াশিংটন জানিয়েছে, জাতিসংঘের এ প্রস্তাবে ইসরাইলের সম্মতি রয়েছে। তবে তেল আবিবের পক্ষ থেকে এখনও বিষয়টি স্পষ্ট করেনি কেউ।
এখন প্রশ্ন হলো কী রয়েছে জাতিসংঘের তিন ধাপের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যে হামাস এতে রাজি হলেও ইসরাইলের কিছুটা গড়িমসি করছে। নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবটির প্রথম ধাপে বলা হয়, গাজায় ছয় সপ্তাহ যুদ্ধবিরতি চলবে। এ সময় হামাসের হাতে বন্দী থাকা জিম্মিদের একাংশকে মুক্তি দেওয়া হবে। বিনিময়ে কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। একই সঙ্গে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হবে এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের নিজেদের এলাকায় ফেরার সুযোগ দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে গাজায় প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশ করতে পারে বলে জানায় ওয়াশিংটন।
দ্বিতীয় ধাপে বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। এ সময় গাজা থেকে সব ইসরায়েলি সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হবে। আর তৃতীয় ধাপে ইসরায়েলের হামলায় বিধ্বস্ত গাজার অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে।