ইসরাইলে দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় আছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। একসময় ইসরাইলের নিরাপত্তার প্রতীক হয়ে উঠেন তিনি। নেতানিয়াহুর এমন অবস্থানকে চরম আঘাত করে হামাস বাহিনী। ৭৫ বছরের ইতিহাসে গত ৭ অক্টোবর ভয়াবহ হামলার শিকার হয় ইসরাইলবাসী। প্রাণ হারায় ১২'শর বেশি মানুষ এবং জিম্মি করা হয় আড়াই শতাধিক ইসরাইলিকে।
এ ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়ে শক্তিশালী গোয়েন্দা বাহিনী মোসাদ। প্রশ্ন উঠে নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব নিয়ে। হামাসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা চালায় ইসরাইল। ৫ মাসের বেশি সময়ের যুদ্ধে এখনো কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায়নি নেতানিয়াহু সরকার। বেসামরিক নাগরিকসহ বহু নারী ও শিশুকে হত্যা করছে ইসরাইলিরা। আন্তর্জাতিক চাপ, নিষেধাজ্ঞা বা অনুরোধ কিছুই কানে তুলছেন না নেতানিয়াহু।
হামাসের হাতে জিম্মিদের এখনো মুক্ত করতে না পারায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে ইসরাইলি জনগণ। নেতানিয়াহুর পদত্যাগ ও নতুন করে নির্বাচনের দাবিতে রাজধানী তেল আবিবে সড়ক অবরোধ করেন হাজার হাজার মানুষ।
আন্দোলনকারীরা বলেন, 'বর্তমান সরকারের সবাইকে পরিবর্তন করতে হবে। নতুন করে নির্বাচন দিতে হবে। যারা এখন ক্ষমতায় আছেন তাদের ওপর আমাদের বিশ্বাস নেই।'
আরেকজন বলেন, 'আমাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন করে নির্বাচনের আয়োজন করা। তা না হলে সামনে ভয়াবহ এবং খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হবে।'
শোভাযাত্রায় অংশ নেন বন্দিদের আত্মীয়স্বজনসহ সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভকারীদের ব্যানার, প্ল্যাকার্ড হাতে চলে স্লোগান। করা হয় অগ্নিসংযোগ। সংঘর্ষ হয় পুলিশের সঙ্গে।
গাজায় নির্বিচার হামলা চালানোয় ইসরাইল সমালোচনার মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা অনেক মিত্র দেশের। নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন সিনেটর চাক শুমার। ইসরাইলে আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানান তিনি।
মার্কিন সিনেটর চাক শুমার বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বর্তমান জোট যদি যুদ্ধ শেষেও ক্ষমতায় থাকে এবং বিপজ্জনক সব নীতি গ্রহণ করে, তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। চলমান অবস্থা পরিবর্তনে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।'
সম্প্রতি দেশটির বিরোধী নেতা ইয়ার ল্যাপিড বলেছেন, নির্বাচনে না গিয়ে বরং নেতানিয়াহুকেই সরিয়ে দেয়ার সময় এসেছে। তবে সব আলোচনা-সমালোচনায় প্রত্যাখ্যান করে রাফা অঞ্চলে যুদ্ধ চালানোর নতুন পরিকল্পনা সাজিয়েছেন নেতানিয়াহু।