এক বাটি গরম স্যুপের জন্য ভিড় ঠেলে আকুতি জানাচ্ছেন গাজার অসহায় বাসিন্দারা। ইসরাইলি হামলায় যেভাবে পাখির মতো মানুষ মরছে, ঠিক সেভাবেই বাড়ছে না খেয়ে মরার শঙ্কা। কিন্তু কোনোভাবেই গাজায় ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না আইডিএফ। এরইমধ্যে অভিযোগ উঠেছে, গাজায় হতাহত বাড়াতে ইসরাইল ব্যবহার করছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বোমা।
গাজায় অবস্থানকারীদের মধ্যে একজন বলেন, 'খাবার আর পানির তীব্র সংকট। মানুষ অনেক বেশি ক্ষুধার্ত। সব দেশই আমাদের বিরুদ্ধে, কেউ আমাদের জন্য কিছু করছে না।'
অন্য একজন বলেন, 'খাবার যারা সরবরাহ করছে, তাদের সক্ষমতাও কমছে। তারা যতটুকু করছে তা যথেষ্ট না। খাবার নেই পানি নেই, বাচ্চারা প্রতিদিন মরছে।'
শরণার্থী শিবিরগুলোতে বেড়েছে হামলার তীব্রতা। আল মাওয়াসিতে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে প্রাণ গেছে অন্তস্বত্বা এক নারীর। গাজার উত্তরের জাবালিয়াতে মৃত্যু হয়েছে একই পরিবারের অন্তত ১২ জনের। আইডিএফ থেকে হুমকি দেয়া হয়েছে, বন্দিদের মুক্তি দেয়া না হলে গাজায় আগ্রাসন আরও বাড়াবে তারা।
এদিকে শুধু গাজা নয়, অবরুদ্ধ পশ্চিমতীরের শরণার্থী শিবিরে অভিযানের নামে ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করছে আইডিএফ। জাতিসংঘ বলছে, তুলকারেম শহর থেকে কয়েকটি পরিবারকে সরে যেতে বলা হয়েছে। যেখানে জেনিন আর তুলকারেমের শরণার্থী শিবিরে হাজার হাজার মানুষকে নিজ বাসভবনেও ফিরতে দিচ্ছে না আইডিএফ।
গেলো ১৮ মার্চ থেকে পুনরায় আগ্রাসন শুরুর পর অন্তত দুই হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। এমন অবস্থায় খোদ ইসরাইলিরা দাবি করছে, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে অবিলম্বে বন্দিদের মুক্তির। তেল আবিবে জড়ো হয়েছেন শত শত ইসরাইলি। এরমধ্যে অনেকের হাতেই ছিল ফিলিস্তিনে নিহত হওয়া শিশুদের ছবি। তাদের একটাই দবি, দ্রুত বন্ধ হোক এই যুদ্ধ, মুক্ত হোক বন্দিরা।
ইসরাইলিদের মধ্যে একজন বলেন, 'গাজায় চলা যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে এসেছি। এই বিক্ষোভের শিরোনাম 'আমরা যুদ্ধকে প্রত্যাখ্যান করি'। সরকারকে আহ্বান জানাই এখনই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে।'
অন্য একজন বলেন, 'যুদ্ধ বন্ধের দাবি নিয়ে এখানে এসেছি। যুদ্ধ ভয়ংকর, ফলাফলও ভয়ংকর। অনেক নিরপরাধ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। এখনই চাই যুদ্ধ বন্ধ হোক।'
গেল ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার পর থেকে কাতার, মিশর আর যুক্তরাষ্ট্র, হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে মধ্যস্থতার চেষ্টা করে গেলেও বরাবরই তারা ব্যর্থ হচ্ছে।





