বিদেশে এখন
0

গাজার দুই হাসপাতালে অপুষ্টিতে ৯ শিশুর মৃত্যু

ত্রাণ সহায়তা প্রবেশে বাধা দিয়ে গাজাবাসীকে এবার না খাইয়ে মারার পায়তারা করছে ইসরাইল। এরই মধ্যে অপুষ্টির সঙ্গে লড়াই করে দুটি হাসপাতালে ৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ অবস্থায় যুদ্ধ বিরতির তোড়জোড় চললেও ভয়াবহ ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজায় প্রাণহানি পৌঁছেছে প্রায় ৩০ হাজারে।

দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগের ভিত্তিতে গাজায় যেকোনো মূল্যে গণহত্যা ও এ সম্পর্কিত কর্মকাণ্ড বন্ধে ইসরাইলকে নির্দেশ দেয় আন্তর্জাতিক বিচার আদালত-আইসিজে। এক মাস পেড়িয়ে গেলেও আদালতের সেই রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। একই সঙ্গে অনাহারে মারার জন্য অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিতে মানবিক সহায়তা আসার পথও বন্ধ করে রেখেছে।

ইসরাইলি বাধায় ত্রাণ সরবরাহের গতি মন্থর হয়ে পড়ায় খাদ্য ও ওষুধসহ মানবিক সংকট পৌঁছেছে চরম পর্যায়। ক্ষুধার সঙ্গে লড়াই করতে করতে দুর্ভিক্ষের দিকে অগ্রসর হচ্ছে অন্তত ৬ লাখ মানুষ। ছোট ছোট শিশুদেরও থাকতে হচ্ছে অনাহারে। এমনকি জ্বালানি ও ওষুধ সংকটে অনেক হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থাও প্রায় বন্ধ।

মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পানিশূন্যতা ও অপুষ্টির সঙ্গে লড়াই করে গাজার উত্তরাঞ্চলে থাকা কামাল আদওয়ান এবং আল-শিফা হাসপাতালে ৯ শিশু মারা গেছে। এর মধ্যে শুধু কামাল আদওয়ান হাসপাতালেই অপুষ্টিতে মারা গেছে ৭ শিশু। আরও বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ পরিস্থিতিতে শিশুদের ধীরে ধীরে নতুন কৌশলে গণহত্যার কাতারে এনে ফেলা হচ্ছে বলে দাবি করছে সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল।

গাজার বাসিন্দারা বলেন, 'আমরা দুর্ভিক্ষের মধ্যে বাস করছি। খাওয়ার কিছু বাকি নেই। আগে গাজর ছিল তাও এখন নেই। এখন ক্যাকটাস খেয়ে প্রাণ রক্ষা করছি। এক সপ্তাহ পর হয়তো ক্যাকটাসও পাওয়া যাবে না। না খেয়ে কীভাবে বেঁচে থাকব তা নিয়েই চিন্তা হচ্ছে।'

আরেকজন বলেন, 'আমরা আশা করি যুদ্ধবিরতি দ্রুত কার্যকর হবে। দুধ ও আটার মতো মৌলিক উপাদান আমাদের কাছে পৌঁছাতে কোনো বাধা থাকবে না।'

এমন দুর্দশার মধ্যে গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য তোড়জোড় চলছে। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই এ যুদ্ধবিরতি হতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও সে আভাস দিয়ে রেখেছেন। আবার একই সঙ্গে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অস্ত্রবিরতির প্রশ্নে ভেটো ক্ষমতার ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ১৪ বিলিয়ন ডলার অনুমোদন ছাড়াও গোলাবারুদ দিয়ে ইসরাইলকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে যাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন।

গাজায় হতাহতের সংখ্যা। ছবি: এখন টিভি

এ অবস্থায় ইসরাইলের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিশ্চিতে এখনও অনেক পথ পাড়ি দেয়া বাকি বলে জানিয়েছে হামাস। ইসরাইলের পক্ষ থেকেও যুদ্ধবিরতি চুক্তির দিকে অগ্রসর হওয়ার কোনো আভাস নেই, বরং নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের মৃত্যু সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এর মধ্যেই সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়ায় যদি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দাবি তোলা হয়, তা যথাযথ হবে না বলে জানিয়েছেন ইসরাইলের জ্বালানি মন্ত্রী এলি কোহেন।

ইএ