১৯৭৪ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংক যাত্রা শুরু করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। একই বছর দেশটি থেকে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের।
রাজধানী আবুধাবিতে প্রধান কার্যালয় ছাড়াও দুবাই, শারজাহ ও আল আইনে আরও তিনটি শাখা রয়েছে জনতা ব্যাংকের। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে শুক্র, শনি ও রোববার ছুটির দিনেও রাত ৮টা পর্যন্ত প্রবাসীদের সান্ধ্যকালীন ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাচ্ছে ব্যাংকটি।
২০২৩ সালে জনতা ব্যাংক থেকে ২ হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স পাঠানো হলেও ২০২৪ সালে এর পরিমাণ ছিলো ৬ হাজার কোটি টাকা।
শ্রমজীবী, পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী মিলিয়ে প্রতিবছর গড়ে প্রায় এক লাখ গ্রাহক জনতা ব্যাংক থেকে রেমিট্যান্স সেবা নিচ্ছেন বলে জানান এর কর্মকর্তারা।
ইউএই’র জনতা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমানে ৪টি শাখা মিলিয়ে আমাদের গ্রাহক সংখ্যা ৬৫ হাজারের বেশি। তাদের মধ্যে সচল অ্যাকাউন্ট হচ্ছে ৩৭ থেকে ৩৮ হাজার। আমরা প্রতিবছর ১ লাখ গ্রাহককে রেমিট্যান্স সুবিধা দিয়ে থাকি।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতে ব্যাংকটির চাহিদা দিন দিন বাড়ায় ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে বেশ কিছু সংকট। এর মধ্যে জনবল সংকট যেমন রয়েছে, তেমনি ২০১৯ সালে স্থাপন করা এটিএম বুথও অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
এমনকি জামানতহীন ও সহজ শর্তে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়ায় গেল কয়েক বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০ মিলিয়ন দিরহাম।
এর মধ্যে গেল দেড় বছরে ৮ মিলিয়ন দিরহাম আদায় করা সম্ভব হলেও এখনো খেলাপি ঋণ ৩০ মিলিয়নের বেশি।
মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘খেলাপি ঋণ গ্রহীতারা যখন আগ্রহ প্রকাশ করবে, তখন তাদের ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়াটা সহজ করে দিয়েছি। আশা করি শিগগিরই আমাদের এটিএমের পূর্ণ সেবাটা আমরা জনসাধারণকে দিতে পারবো।’
এদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স আবুধাবি থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে সপ্তাহব্যাপী ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
প্রতি সপ্তাহে কেবল আবুধাবি থেকেই গড়ে ২ হাজার যাত্রী বিমানে যাতায়াত করছেন। তবে লাগেজ বহনের ক্ষেত্রে যাত্রীরা উদাসীন বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় সচেতনতামূলক বিশেষ নির্দেশিকা প্রচার করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আবুধাবি আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘যাত্রীরা অনেক সময় অতিরিক্ত বড় সাইজ বা অড সাইজের ব্যাগ নিয়ে যায়, এগুলো অ্যাকোমোডেশনে আমাদের সমস্যা হয়ে যায়।’
আবুধাবি থেকে সিঙ্গেল ব্যাগেজ ও জিরো ব্যাগেজ যাত্রীদের জন্য তুলনামূলক কম খরচে বিশেষ সেবা চালু রাখলেও দীর্ঘদিন প্রবাসী বাংলাদেশিদের মরদেহ পরিবহন না করার অভিযোগ রয়েছে বিমান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।
যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, ছোট ও মাঝারি ফ্লাইট পরিচালনার কারণেই জায়গা সংকুলান হচ্ছেনা তাদের।
শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘অনেক সময় মাঝারি এয়ারক্রাফট চলাচলের কারণে আমাদের যথেষ্ট অ্যাকোমোডেশন করা সম্ভব হয় না।’
দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ও জাতীয় পতাকাবাহী দুটি প্রতিষ্ঠান সেবা দিচ্ছে আমিরাতের প্রবাসী বাংলাদেশিদের। তবে দ্রুত সময়ে জনতা ব্যাংক ও বিমানের চলমান সংকটগুলো নিরসনের পাশাপাশি যথাযথ ও আন্তর্জাতিক মানের সেবা নিশ্চিতের প্রত্যাশা প্রবাসীদের।