আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

৪০টির বেশি দেশে 'স্লিপিং ব্যাগ' রপ্তানি করছে বাংলাদেশ

ভিন্ন ঘরানার রপ্তানি পণ্য 'স্লিপিং ব্যাগ', ভ্রমণে বিশ্রামের জরুরি অনুষঙ্গ

রপ্তানির গল্পে পোশাক, চামড়া, পাটজাত পণ্য বা ওষুধের সাফল্য অনেক শুনেছেন। তবে নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে, ভিন্ন ঘরানার রপ্তানি পণ্য। তেমনই একটি পণ্য স্লিপিং ব্যাগ, যা বিশ্বের ৪০টির বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। আগামীতে বৈশ্বিক স্লিপিং ব্যাগের বাজারে বড় সম্ভাবনা দেখছেন বিনিয়োগকারীরা।

মূলত বিশেষ ধরনের কাপড়ে তৈরি হালকা বিছানা। ভ্রমণ, পাহাড়ে ট্র্যাকিং, ক্যাম্পিং বা হাইকিংয়ে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটানোর এক আরামদায়ক আশ্রয় স্লিপিং ব্যাগ। ঠিক তাঁবুর মতো না হলেও তাঁবুর প্রযুক্তি ও উপাদানে তৈরি এই ব্যাগ। সহজে বহনযোগ্য, ভাঁজ খুলে বিশ্রাম নেয়া যায় সুবিধাজনক স্থানে।

ইউসেবিও স্পোর্টিং বিডির (মানবসম্পদ বিভাগ) ব্যবস্থাপক জামশেদুল ইসলাম বলেন, দিনে এক হাজার স্লিপিং ব্যাগ তৈরি হচ্ছে। আর এগুলোর প্রধান ক্রেতা ওয়ালমার্ট, হ্যাল স্পোর্টস, স্পোর্টস মাস্টারের মতো প্রতিষ্ঠান।

তিনি আরও বলেন, ‘আগে একটা সেকশনে ব্যাগ উৎপাদন হতো, এখন নতুন আরেকটি সেকশনে ব্যাগ তৈরির কাজ চলছে।’

এই কারখানার দুই হাজার ৮০০ শ্রমিকের মধ্যে স্লিপিং ব্যাগ তৈরি করেন এক হাজার ৫ শতাধিক জনবল। তাদের দক্ষ হাতে একেকটি স্লিপিং ব্যাগ তৈরিতে গড়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। দীর্ঘসময় এসব শ্রমিক সহজেই এই খাতে দক্ষতা অর্জন করছেন। বিশেষ এই পণ্য তৈরিতে মূল কাঁচামাল কৃত্রিম তুলো, পলিস্টার ও জিপার। তাছাড়া রিবন, ইলেস্টিকসহ আরও নানা উপাদানে ৫ থেকে ৬ ধাপে একেকটি ব্যাগ তৈরি হয়।

শ্রমিকরা বলেন, ‘কাটিং থেকে আসার পর চেক করা হয়। এরপর লাইনে আসরে ধাপে ধাপে আমাদের কাজ চলে।’

বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি স্লিপিং ব্যাগ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছর দুই কোটি ৫৬ লাখ ডলারের স্লিপিং ব্যাগ রপ্তানি হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে তা দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলারে। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ অর্থনৈতিক সংকটে ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা আবার ২ কোটি ৬৩ লাখ ডলারে নেমে যায়।

বর্তমান বাজার সুখবর না দিলেও এই খাতে বাংলাদেশের আরও সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বে এই ব্যাগ উৎপাদনে চীন এগিয়ে থাকলেও সম্প্রতি তারা মনোযোগ দিয়েছে হাইটেক প্রযুক্তিতে। তাই জনবল সংকট ও উৎপাদন খরচ বাড়ায় স্লিপিং ব্যাগের ক্রয়াদেশ হারাচ্ছে দেশটি।

ইউসেবিও স্পোর্টিং বিডির কমার্শিয়াল ম্যানেজার মাসরুল আনোয়ার বলেন, 'বিদেশে স্লিপিং ব্যাগ বহুল ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় পণ্য। সেজন্য এর বাজারও বেশ বড়। কিন্তু আমরা সেই বাজার খুব বেশি দখল করতে পারিনি।’

বর্তমানে বিশ্বে স্লিপিং ব্যাগের বাজার দুই হাজার মিলিয়ন মার্কিন ডলারের, যা ২০৩২ সালে ৩ হাজার ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পৌঁছে যাওয়ার আভাস রয়েছে।