যুক্তরাষ্ট্রে ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে বন্দুক হামলায় নিহত ২, আহত ৯

ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী | ছবি: সংগৃহীত
0

যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ডের ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে বন্দুক হামলায় অন্তত দুইজন নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৯ জন। এখনও হামলাকারীকে ধরতে পারেনি পুলিশ। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ক্যাম্পাসের কোনো না কোনো ভবনে লুকিয়ে আছে সে। ক্যাম্পাস ও এর আশেপাশের এলাকায় লকডাউন জারি করা হয়েছে। এখনও প্রকাশ করা হয়নি নিহতের পরিচয়। এদিকে, এ হামলার পর গভীর উদ্বেগ ও হতাহতদের পরিবারের প্রতি শোক জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

বড়দিনের মাত্র কয়েক দিন আগেই বন্দুক হামলার কবলে যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ডের স্বনামধন্য ব্রাউন ইউনিভার্সিটি। ছুটির আমেজ ছাপিয়ে এখন আতঙ্ক ক্যাম্পাস ও এর আশপাশের এলাকায়।

ঘটনার সূত্রপাত স্থানীয় সময় বিকাল ৪টার দিকে। ক্যাম্পাসের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে সিএনএন জানিয়েছে, এদিন ক্যাম্পাসের ইঞ্জিনিয়ারিং ও পদার্থবিজ্ঞান ভবনে পরীক্ষা চলছিল। এসময় কালো পোশাক পড়া এক বন্দুকধারী এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। এবং এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়। ঘটনার আকস্মিকতায় ভয়ে ডেস্ক ও টেবিলের নিচে লুকিয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা।

হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস এলাকা। রোড আইল্যান্ড পুলিশ ছাড়াও এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে সিক্রেট সার্ভিস ও যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।

যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটটি মর্যাদাপূর্ণ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে একসঙ্গে আইভি লিগ স্কুল বলা হয়, যার একটি এ ব্রাউন ইউনিভার্সিটি। স্বনামধন্য এই ক্যাম্পাসে হামলার ঘটনায় উদ্বেগে স্থানীয়রা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রোড আইল্যান্ডের মেয়র। সংবাদ সম্মেলনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন রোড আইল্যান্ডের মাটিতে এমন হামলার হতে পারে তা কল্পনাও করেননি তিনি।

আরও পড়ুন:

রোড আইল্যান্ডের ব্রেট স্মাইলি বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত হামলাকারীকে আটক করা যায়নি। ব্রাউন ইউনিভার্সিটি এলাকার আশেপাশে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ নির্দেশনা জারি আছে। আপনি এ ক্যাম্পাস বা এর আশেপাশের এলাকার বাসিন্দা হলে, ঘরে থাকুন, বাইরে বের হবেন না। নির্দেশ তুলে নেয়ার আগ পর্যন্ত বাড়ি থেকে বের হওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সপ্তম স্থানে আছে এ ব্রাউন ইউনিভার্সিটি। হামলার সময় মার্কিন সেনা ও বিমান বাহিনীর ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজে ফিরে সাংবাদিকদের জানান, হামলার পরপরই তাকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে, শুরু থেকেই তিনি পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন। হতাহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক জানিয়ে হামলাকারীকে দ্রুত হেফাজতে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘ব্রাউন ইউনিভার্সিটির পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাকে জানানো হয়েছে। সত্যিই খুব ভয়াবহ ঘটনা। এ মুহূর্তে আমরা ভুক্তভোগীদের ও যারা গুরুতর আহত হয়েছেন তাদের জন্য প্রার্থনা করতে পারি। কী ঘটেছে সে বিষয়ে পরে আপনাদের জানানো হবে। এটি দুঃখজনক, খুবই দুঃখজনক। শুধু প্রার্থনা করুন।’

এদিকে, হামলার পর ক্যাম্পাস এলাকায় লকডাউন জারি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে আশপাশের রেস্তোরাঁয়। নিরাপত্তা বলয়ে ঢেকে ফেলা হয়েছে রোড আইল্যান্ড হাসপাতাল, যেখানে হামলায় আহতদের চিকিৎসার দেয়া হচ্ছে

এফএস