স্পষ্টবাদী আচরণে জেলেনস্কিকে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসা

0

ট্রাম্পের সঙ্গে স্পষ্টবাদী আচরণে নানা মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার হাত ধরে বিশ্ব নতুন নেতৃত্ব পেতে পারে বলেও মত বিশ্লেষকদের। অপরদিকে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোয় মার্কিন নিরাপত্তা বলয়ে থেকেও অনিরাপদ হতে পারে ইউরোপের পথ।

ন্যাটোতে যোগ দেয়া ইস্যুকে কেন্দ্র করে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাত ধরে ২০২২ সালে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়ায় ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর সামরিক সহায়তায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে বেশ শক্ত অবস্থান তৈরি করে দেশটি।

তবে জো বাইডেনের রদবদলের মধ্য দিয়ে দুর্দশা নামে ইউক্রেনীয়দের ভাগ্যে। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের ট্রাম কার্ডের খেলায় উভয় সংকটে রয়েছে ইউক্রেন। হোয়াইট হাউজ জানায়, যেকোনোভাবেই হোক ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে শান্তিচুক্তিতে রাজি করাবে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যথায় এ ইস্যুকে কেন্দ্র করে সামনের দিনগুলোতে যা যা ঘটবে তার সমস্ত দায়ভার নিতে হবে তাকে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'জেলেনস্কির বলা দরকার ছিল যেকোনোভাবেই হোক শান্তি চাই। পুতিনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। পুতিনের বিরুদ্ধে তার দাঁড়ানোর কথা না। তার মাথায় সব নেতিবাচক চিন্তা ঘুরে। তার হাতে কোন কার্ড নেই।'

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে একেক সময় একেক আচরণে প্রশ্নবিদ্ধ করছে ট্রাম্পের নেতৃত্বকে। অপ্রত্যাশিত এই নেতার কর্মকাণ্ডে ১৯৪৫ সালের পর এই প্রথম মুখোমুখি অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ট্রাম্প যখন ইউক্রেনের সঙ্গে বিমুখ আচরণ করছেন তখন তাদের মাথায় ছাতা ধরেছে ইউরোপের দেশগুলো। এরই মধ্যে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া শক্ত প্রতিপক্ষ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে কত দিন টিকতে পারবে ইউক্রেন? আর ইউরোপই বা কতদিন তাদের এই সহায়তা চালিয়ে যেতে পারবে? অবশ্য এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন খোদ ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট।

ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয় কঠিন হবে। আলোচনার মাধ্যমে সামনের দিনগুলোর পরিকল্পনা করতেই এখানে এসেছি। ইউক্রেন পরাজিত হতে চায় না।'

বিবিসির বিশ্লেষণ বলছে, ইউরোপের দেশগুলো যখন ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াবে তখন তাদেরও ছেড়ে কথা বলবেন না ট্রাম্প। এ পরিস্থিতিতে সংকটে পড়তে পারে পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো। ইউরোপকে নিরাপত্তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসতে পারেন ট্রাম্প।

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে জেলেনস্কির স্পষ্টবাদী ব্যবহার প্রশংসা কুড়িয়েছে অনেকের। ব্রিটেনের বাণিজ্যমন্ত্রী ডুগলাস অ্যালেকজেন্ডার এ বিষয়ে বিবিসিকে বলেন, উইনস্টন চার্চিলের পর জেলেনস্কি ইউরোপের সাহসী রাজনৈতিক নেতা। তার হাত ধরে হয়তো গত ৮ দশক ধরে চলে আসা এককেন্দ্রিক ভূ-রাজনীতি পরিবর্তনের মুখ দেখতে পারে। ইইউর শীর্ষ কূটনীতিক কাজা কাল্লাস বলেন, বিশ্বে নতুন নেতৃত্ব দরকার। ইউরোপ চাইলে এই চ্যালেঞ্জ নিতে পারে। তবে প্রশ্ন রয়ে যায়, তাদের সক্ষমতা নিয়ে।

এসএস