সৃষ্টিকর্তার কাছে সৌভাগ্যের প্রার্থনায় নববর্ষ পালনের সময়ই চীনের ওপর শুল্কারোপের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত চীনাদের জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনবে নাকি দুর্ভাগ্য, তা নিয়ে আলোচনা এখন নানা মহলে। চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
মঙ্গলবার থেকে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ ও চীনের ওপর ১০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক কার্যকরের কথা ছিল। তবে এর এক দিন আগেই সিদ্ধান্ত থেকে আংশিক সরে এসেছেন ট্রাম্প। কানাডা ও মেক্সিকোর জন্য ৩০ দিন স্থগিত থাকবে শুল্কারোপ। তবে, চীনকে এই তালিকায় রাখেননি তিনি। ফলে, আগের সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে বেইজিংয়ের জন্য।
ট্রাম্পের পক্ষপাতমূলক এ পদক্ষেপের কড়া জবাব দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এক্ষেত্রে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর দেখানো পথেই হেঁটেছেন তিনি। মার্কিন পণ্যের ওপরও পাল্টা করারোপের ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং।
এই যখন অবস্থা, তখন রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন, কানাডা-মেক্সিকোর বেলায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হলেও, চীনের বেলায় কেন নয়? অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কানাডা ও মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ হলেও চীন তাদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। চীনের বাণিজ্যিক অগ্রগতি কোনভাবেই কাম্য নয় ওয়াশিংটনের।
২০১৮ সালে প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প যখন চীনের ওপর করারোপ করেন, তখন বাণিজ্য যুদ্ধের বিষয়ে মাথা তেমন একটা মাথা ঘামায়নি বেইজিং। তবে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে আলোচনা না করেই শুল্কারোপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন ট্রাম্প।
অবশ্য চীনের ওপর ট্রাম্পের শুল্কারোপের বিষয়টি তাদের জন্য বাণিজ্যক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে ধারণা করছেন অর্থনীতিবিদরা। কারণ হিসেবে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর ওপরও শুল্কারোপ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র, সেই শঙ্কা থেকে মার্কিন মুলুক থেকে মুখ ফিরিয়ে চীনের দিকে ঝুঁকতে পারে তারা।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শাসনামল থেকে শিক্ষা নিয়ে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে বেশ আগ্রহ দেখাতে পারে অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এ বিশ্লেষণ অস্ট্রেলিয়ার গবেষণা প্রতিষ্ঠান 'অস্ট্রেলিয়ান ইন্সটিটিউশন অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ারর্সে'র। এছাড়াও তাইওয়ান নিয়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেইজিংকেই বেছে নেবে বলে মত অর্থনীতিবিদের।