ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় রোববার ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়ে ভিডিও প্রকাশ করেছে খোদ ইসরাইলি বাহিনী। হামাসের অস্ত্র ভাণ্ডারকে লক্ষ্যবস্তু করার দাবি তাদের। অথচ দক্ষিণের শহর খান ইউনিস, মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এবং উত্তরের বেইত হানুনে চালানো হয়েছে এসব আগ্রাসন।
আশ্রয়কেন্দ্র, স্কুল ও হাসপাতাল টার্গেট করে চালানো হামলায় একদিনেই প্রাণ গেছে প্রায় একশ নিরীহ মানুষের। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মরদেহ। হাহাকারে ভারি হয়ে উঠেছে গাজার আবহ।
প্রাণহানির তালিকায় আছে উদ্ধারকর্মী ও বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও। সবচেয়ে বেশি হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে বেইত হানুন এলাকায়। এ অবস্থায় ইসরাইলি বর্বরতা থেকে অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিকে রক্ষার বিশ্ববাসীর প্রতি জোরালো আহ্বান অসহায় গাজাবাসীর।
স্থানীয় একতজন বলেন, ‘আমরা একটি সমাধান চাই। আল্লাহ আপনিই আমাদের জন্য যথেষ্ট। আপাান দেখছেন আরব জাতিসহ আমাদের জন্য কেউ কিছু করছে না।’
গাজায় বাস করা একজন বলেন, ‘আমিৃ বিশ্বের সব দেশগুলোকেই জিজ্ঞেস করছি, আপনারা আর কতদিন নীরব থাকবেন? গাজা ধ্বংস হয়ে গেছে। এমন কিছু নেই যা আমরা হারাইনি।’
১৪ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় চলমান ইসরাইলি গণহত্যার শিকার প্রায় ৪৫ হাজারের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। খেলার সাথীদের হারিয়ে বেঁচে থাকা অবুঝ শিশুরও শঙ্কা ইসরাইলি বাহিনীর হাতে তাদের মৃত্যুও আসন্ন। গাজায় মানবাধিকার সংস্থাগুলোর চালানো এক জরিপে ওঠে এসেছে এসব তথ্য।
ইসরাইলি আগ্রাসনে গত চার মাসে গাজায় তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা ১৯ হাজার শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনে থাকা জাতিসংঘ ত্রাণ ও শরণার্থী সংস্থা। এমনকি তাদের আওতায় থাকা প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রেই বাস্তুচ্যুতদের উপচে পড়া ভিড় হচ্ছে। যাদের জন্য খাদ্য, সুপেয় পানি ও ওষুধ সরবরাহ মারাত্মকভাবে সীমিত বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
গাজায় সংকট বাড়তে থাকায় হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে শঙ্কিত ইসরাইলিদের মাঝে বাড়ছে বিরোধী ক্ষোভ। এ অবস্থায় জিম্মিদের মুক্তি ও ইসরাইলি বিজয় নিশ্চিতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। ইসরাইলের বিজয় নিশ্চিতের বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। দীর্ঘ আলোচনাও আমাদের জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা নিয়ে কথা বলেছি এবং কাজ শুরু করেছে। জীবিত এবং মৃত অবস্থায় জিম্মিদের ফিরিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত।’
এদিকে গাজা গণহত্যা মামলায় ডাবলিন সমর্থন দেয়ায় আয়ারল্যান্ডে দূতাবাস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল। তবে তেল আবিব যত কিছুই করুক না কেনো ফিলিস্তিনের পক্ষে সমর্থন কমবে না বরং বাড়বে, এরমধ্য দিয়ে গাজায় যুদ্ধাপরাধের জন্য প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু এবং অন্যান্য শীর্ষ ইসরাইলি কর্মকর্তাদের মৃত্যুদণ্ড বাস্তবায়ন অসম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম ঘারিবাদি।