হেমন্তের শেষভাগ থেকে বাড়ছে শীতের দাপট। কুয়াশা মোড়ানো ভোরে খেজুরের রস সংগ্রহ কার্যক্রম। সূর্যের তেজ বাড়ার আগেই খেজুর রসের স্বাদ নিতে ব্যস্ত অনেকে। স্বাস্থ্যঝুঁকি জেনে অনেকে গরম করে খাওয়ার জন্য কিনছেন। এই চিত্র টাঙ্গাইলের কালিহাতির বিভিন্ন অঞ্চলজুড়ে। জেলায় রসের মান ভালো হওয়ায় রাজশাহী থেকে গাছিরা আসেন রস-গুড় সংগ্রহের মৌসুমি বাণিজ্য করতে। মৌসুমজুড়ে প্রতিটি গাছ লিজ নেন ৪০০ টাকায়।
একজন গাছি বলেন, ‘আমাদের রাজশাহীর থেকে এদিকের গুড়ের মান ভালো। যেহেতু আমাদের রাজশাহী জেলার মাটি কড়া। আর এদিক মাটি ভালো। মাটি গুণে সবকিছু হয়।’
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজমুস সাদেকীন বলেন, ‘খেজুরের গুড় আমরা চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারি। সঠিক প্রণোদনা পেলে টাঙ্গাইলের গুড় এবং খেজুরের রস স্বীকৃতিও পেতে পারে।’
কাঁচা রসে নিপা ভাইরাস সংক্রমণের শঙ্কায় সাধারণ মানুষকে বিরত থাকার আহ্বান চিকিৎসকদের।
টাঙ্গাইলের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুহম্মদ আজিজুল হক বলেন, ‘নিপা ভাইরাসের বিষয়টি খুব খারাপ। বর্তমানে শুরু থেকে বাংলাদেশে যত রোগী নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে তার মধ্যে ৭২ শতাংশের ওপরে মারা গেছে। খেজুর রস আমরা খেতে পারবো। একেবারে যে খেতে পারবো না তা না। অবশ্যই ফুটিয়ে খেতে হবে। কোনোভাবেই কাঁচা খেজুর রস খাওয়া যাবে না।’
জেলায় উৎপাদিত খেজুরের গুড়ের ব্যাপক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা থাকায় গাছের সংখ্যা বাড়াতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
টাঙ্গাইলের উপ-পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মো. আশেক পারভেজ বলেন, ‘প্রচুর পরিমাণে খেজুরের চারা রোপণ কর্মসূচি আমরা প্রতিবছর পালন করে থাকি। যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম খেজুরের রস এবং খেজুরের গুড় সবাই এটা পায় এবং এটা থেকে বঞ্চিত না হয়।’
কৃষি বিভাগ ও উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় খেজুরের রস ও গুড় টাঙ্গাইলের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে- এমনটি প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।