দেশে এখন
0

রাজশাহীতে বাড়ছে হাঁস পালনের আগ্রহ

প্রতি শীতেই হাঁসের মাংসের চাহিদা বাড়ে। সারা বছর কম-বেশি বিক্রি হলেও শীতে ছোট হোটেল থেকে অভিজাত রেস্তোরাঁয় বিক্রি বাড়ে কয়েক গুণ। চাহিদা বিবেচনায় দিন দিন রাজশাহীতে বাড়ছে হাঁস পালনের আগ্রহ। আর এসব প্রান্তিক খামারিদের পর্যাপ্ত প্রণোদনা ও প্রশিক্ষণ সহায়তা দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়।

গনগনে উনুনে চলছে হাঁসের মাংসের রান্না। কয়েক ধাপে তাতে মেশানো বিশেষ মশলার মিশেলে যা হয়ে উঠছে কালো বর্ণের লোভনীয় স্বাদের হাঁসের কালাভুনা। এভাবেই ক্রেতাদের আতিথেয়তায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাঁসের মাংস রান্না ও বিক্রি ঘিরে জমে ওঠে রাজশাহীর মড়মড়িয়া বাজারের দোকানগুলোর বেচাকেনা।

শুরুতে দু-একটি দোকান থাকলেও ক্রেতাদের চাহিদায় বড় হয়েছে এখানকার ব্যাবসায়িক পরিধি, বেড়েছে দোকানের সংখ্যা। সারাবছর কম-বেশি বিক্রি হলেও শীত মৌসুমে এখানকার দোকানগুলোতে হাঁসের মাংসের বিক্রি বাড়ে কয়েক গুণ। এক একটি দোকানে দৈনিক মাংস বিক্রি হয় ৪০ থেকে প্রায় ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ছুটির দিনগুলোতে যা বেড়ে হয় দ্বিগুণ।

একজন বিক্রেতা বরেন, 'শীতের সময় হাঁসের মাংস বেশি চলে। শীতের সময় এই মাংসের গায়ে তেল থাকে এবং খেতে ভালো লাগে।'

প্রতিদিনই এই হাঁসের কালাভুনার স্বাদ নিতে রাজশাহীর পবা উপজেলার মড়মড়িয়া বাজারে আসেন হাজারও ভোজনরসিক মানুষ। শুধু রাজশাহী ও এর আশপাশে নয় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘুরতে আসা ক্রেতারাও ভিড় করেন এখানে।

একজন পর্যটক বলেন, 'চাঁপাই থেকে এসেছি। এখানে আমার মূল কারণ হলো হাসেঁর মাংস। এই অঞ্চল হাসেঁর মাংসের জন্য বিখ্যাত।'

বছরজুড়ে হাঁসের মাংসের চাহিদা ভালো থাকায় প্রান্তিক জনপদে বাড়ছে হাঁস পালনের আগ্রহ। তাই রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে হাঁসের খামারের সংখ্যা। তাতে গেলো বছরগুলোতে উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি বড় হয়েছে বাজার। মোহনপুরের বিল এলাকায় হাঁস পালনে তাই গড়ে উঠেছে ছোট-বড় প্রায় ৬০টির বেশি খামার।

একজন খামারি বলেন, 'এখন হাঁসের দামটা বেশি হয়েছে। আগে ছিল ৩০০ টাকা, এখন হয়েছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।'

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, দিন দিন জলাশয় কমে যাওয়ায় কমেছে হাঁসের প্রাকৃতিক খাদ্যভাণ্ডার। তবে আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নতজাতের হাঁস পালনে প্রান্তিক খামারিদের প্রণোদনা ও প্রশিক্ষণ সহায়তার আশ্বাস তাদের।

রাজশাহী মোহনপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. খন্দকার সাগর আহমেদ বলেন, 'সমিতির মাধ্যমে আমরা তাদের হাঁস চাষে উৎসাহিত করছি। এবং হাঁস চাষ কীভাবে হবে, হাঁস পালন কীভাবে করবে, কখন ভ্যাকসিন করবে, হাঁসের যেন রোগব্যাধি না হয়, সার্বিকভাবে তাদের একটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করছি।'

রাজশাহী জেলার নয়টি উপজেলায় ছোট-বড় হাঁসের খামার রয়েছে ৯৪২টি। আর এসব খামার থেকে উৎপাদিত প্রায় আট লাখের বেশি হাঁস পূরণ করছে স্থানীয় বাজারের ডিম ও মাংসের চাহিদা।

এসএস