বিদেশে এখন
0

আসাদের পতনে বিভিন্ন দেশে বিজয় উল্লাসে সিরিয়ানরা

স্বৈরশাসক আসাদ সরকারের পতনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিজয় উল্লাসে মেতেছেন সিরিয়ানরা। ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধে অন্যদেশে আশ্রয় নেয়া হাজারও শরণার্থী ফিরতে চান নিজ দেশে। অন্ধকার যুগের অবসান পেরিয়ে এবার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও মর্যাদা রক্ষায় নতুন যুগের সূচনা হবে বলে মন্তব্য তাদের।

পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার জয়, এ জয় আনন্দের, এ জয় গৌরবের। আসাদের পতনে কেবল সিরিয়াতেই নয়, বিজয়ের আনন্দে মাতোয়ারা জামার্নিতে আশ্রয় নেয়া হাজারও সিরিয়ান শরণার্থী।

রাজধানী বার্লিনে পতাকা, প্লাকার্ড হাতে হাজারও মানুষের উল্লাস। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পরেই এদের বেশিরভাগই পালিয়ে আসেন জার্মানিতে। এবার স্বাধীন দেশে ফিরতে চান তারা। তাদের আশা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সিরিয়ায় রচিত হবে এবার নতুন অধ্যায়।

সিরিয়ার বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আমার দেশ সিরিয়া এখন স্বাধীন, সৃষ্টিকর্তাকে কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ জার্মানি, ধন্যবাদ বার্লিন। এখন কোনো রাজনীতি নেই, কোনো সমস্যা নেই, সবকিছু ভাল হবে। বিজয় এসেছে এবং আমরা শিগগিরিই সিরিয়ায় ফিরে যাব।’

আরেকজন বলেন, ‘এই অনুভূতিটি খুব কঠিন, আমাদের স্বাধীনতা ফিরে পেয়ে খুব খুশি। যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন। আমি জার্মানিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, জার্মান সরকার, জার্মান জনগণও যারা আমাদের আশ্রয় দিয়েছেন।’

জার্মানির পাশাপাশি ইউরোপের আরেক দেশ গ্রীসেও চলছে সিরিয়ানদের বিজয় উল্লাস। রাজধানী এথেন্সে নেচে গেয়ে আনন্দ উৎসবে মাতোয়ারা হাজারও মানুষ। আতশবাজি, প্লার্কার্ড পতাকা নিয়ে বিভিন্ন শহরে চলছে উল্লাস।

স্বৈরশাসক আসাদ সরকারের পতনের খবরের পর পরই লন্ডনে নিজ দেশের পতাকা হাতে রাস্তায় নেমে পড়েন তিন শতাধিক সিরিয়ান নাগরিক। তাদের সঙ্গে আনন্দ উল্লাসে যোগ দেন স্থানীররাও। লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ার রূপ নেয় জনসমুদ্রে। নানা স্লোগানে মুখর ছিল পরিবেশ।

স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘আমরা নতুন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাসহ নতুন সিরিয়া তৈরি করছি। আমরা নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠা করবো, আমাদের দেশে নিয়ন্ত্রণকারী একক শাসনের উপর নয়।’

আরেকজন বলেন, ‘এই অনুভূতি বর্ণনা করা কঠিন। আমরা এটির জন্য দীর্ঘকাল অপেক্ষা করছি। আমরা বলতে পারি সিরিয়া এখন একটি মুক্ত দেশ।’

দেশ স্বাধীন হওয়ার ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরের উৎসবে মেতেছেন হাজারও সিরিয়ানরা। প্যারিসের প্লেস দে লা রিপাবলিকে জড়ো হয়ে পতাকা হাতে বিজয় মিছিল করেন তারা। গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আসাদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছে অনেকেই।

ফ্রান্সের সিরিয়ান নাগরিকের একজন বলেন, ‘এটাই সিরিয়া। সিরিয়া স্বাধীন। আমি সাত বছর কারাগারে ছিলাম। শাসকদের হাতে আমার অনেক বন্ধু নিহত হয়েছেন। আমরা একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক সিরিয়া গড়তে যাচ্ছি। আমরা একটি সুন্দর দেশ গড়তে যাচ্ছি, কারাগার ছাড়া, স্বৈরশাসক ছাড়া, অপরাধ ছাড়া, মৃত্যু ছাড়া।’

ফ্রান্সের পাশাপাশি মাদ্রিদে সিরিয়ান দূতাবাসের সামনে বিজয় মিছিল করেন অনেকে। নারী, শিশু বৃদ্ধসহ আনন্দ মিছিলে অংশ নেন সবাই। আসাদ বাহিনীর বিচারের পাশাপাশি সিরিয়া স্বাধীনতার লড়াইকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে উল্লেখ করেন তারা।

আসাদ সরকারের পতনে এবার সিরিয়ায় ন্যায় বিচারের পাশাপাশি নাগরিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।

ইএ