ইরান-ইসরাইলের পাল্টাপাল্টি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা এখন চরমে। গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরাইল ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত দুইবার হামলা চালিয়েছে ইরান। এর জবাবে প্রতিশোধ নিতে গেলো শনিবার বিমান হামলা চালিয়ে ইরানের ৪ সেনাকে হত্যা করে ইসরাইল।
যদিও তেহরানের দাবি, হামলায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলছেন, ইরানে হামলাটি ছিল সুনির্দিষ্ট ও শক্তিশালী। এদিকে, ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, হামাস ও হিজবুল্লাহকে দুর্বল করতে ইরানে হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেন, ‘হামাস ও হিজবুল্লাহ এই দুটি গোষ্ঠী ইসরাইলের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে ষড়যন্ত্র করা আসছে। তাদের অস্ত্র সরবরাহ দিয়ে পরিপুষ্ট করে রেখেছে ইরান। এবার ইরানের সেই সক্ষমতার জায়গায় আঘাত করা হয়েছে।’
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘ইরানে হামলা করে ইসরাইল তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে। ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কাঠামোতে শক্তিশালী হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলার মাধ্যমে ইসরাইল তার সমস্ত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন করেছে।’
এদিকে, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, তেহরানের ব্যাপারে ভুল হিসাব-নিকাশ করেছে ইসরাইল। ইরান অবশ্যই তার শক্তি প্রদর্শন করবে। তবে তা জনগণ ও দেশের স্বার্থ বিবেচনা করেই পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, ‘ইরানে হামলা চালিয়ে ইসরাইল বড় ভুল করেছে। তারা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়েও অতিরঞ্জিত তথ্য দিচ্ছে। তবে এই হামলাকে ছোট করে দেখার কিছু নেই। ইসরাইলিদের জবাব দেয়ার আগে ইরানের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি সবচেয়ে আগে বিবেচনা করা হবে।’
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, ইসরাইলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্র জড়িত ছিল। তারা তেহরানে হামলার জন্য সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘ইহুদিবাদী শাসনের পেছনে রয়েছে এবং ইসরাইলের সমস্ত অপরাধের অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলেই ইরানে হামলা করেছে ইসরাইল। হামলার আগেই ইসরাইলকে অস্ত্র সহায়তা দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।’
পাল্টা জবাব দিতে ইরান ইসরাইলে হামলা চালালে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা আরও বাড়বে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরাইলের মিত্ররা ইরানকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়ে আসছে। সৌদি আরবসহ আরব বিশ্বের অনেক দেশও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা কমানোর পক্ষে। হামাস ও হিজবুল্লাহ বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে ইসরাইল।