সিরীয় সেনাবাহিনীর অস্ত্র কোনো চরমপন্থি সংগঠনের হাতে পৌঁছালে তা দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে তেল আবিবের এমন বক্তব্যে আশ্বস্ত হতে পারছে না জাতিসংঘ। বরং, সিরিয়াজুড়ে ইসরাইলি হামলা দেশটির সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বৃহস্পতিবার(১২ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ইসরাইলকে দমাতে না পারলে সিরিয়ায় আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।
যদিও ইসরাইলের হয়ে সাফাই গাইছে ওয়াশিংটন। জেরুজালেম ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা জেইক সুলিভান বলছেন, সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে এ ধরনের হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা।
এদিকে, সিরিয়ার চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণের উপায় খুঁজতে বৃহস্পতিবার জর্ডান সফর করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'অবিলম্বে সিরিয়া থেকে মার্কিন নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।'
বিশেষ করে ৭ মাস আগে সিরিয়ায় আটক মার্কিন এক নাগরিককে রাজধানী দামেস্কে খুঁজে পাওয়ার পর এ নিয়েও মুখ খুলেছেন ব্লিংকেন। এছাড়া, সিরিয়াকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সমর্থন দেয়ার বিষয়ে জর্ডানে অন্যান্য দেশের প্রতিনিধি দলের সাথে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, ‘সিরিয়ার জনগণের পাশে দাঁড়াতে আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে। বিশেষ করে যে সব সংগঠন আসাদের শাসনামলে নিখোঁজ নারী ও শিশুসহ বেসামরিক নাগরিকদের উদ্ধারে কাজ করছে তাদের পাশে আছি। বিশেষ করে মার্কিন সাংবাদিক অস্টিনের মতো যারা এখনও নিখোঁজ, যে কোনো মূল্যে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনা হবে।’
জর্ডান পর একই দিনে তুরস্ক সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন ব্লিংকেন। আলোচনা হয়েছে সিরিয়ার স্থিতিশীলতা ফেরানোর প্রসঙ্গে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, চলামান অস্থিরতা থেকে পরিত্রাণ ও সিরীয় অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে দাঁড়াতে, চলতি সপ্তাহে জর্ডানের আয়োজনে 'সিরিয়া ক্রাইসিস সামিট'- এ অংশ নিতে যাচ্ছে সৌদি আরব, ইরাক, লেবানন, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল।
এদিকে বাসার আল আসাদের পতনের সাথে সরাসরি জড়িত তাহির আল সামের মতো সংগঠনের সাথে এবার আলোচনার পথ খুঁজছে মস্কো। রুশ গণমাধ্যম আরটি'র প্রতিবেদনে আরও বলা হচ্ছে, আসাদ বিরোধীরা কোনোভাবেই যেন সিরীয় সেনাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদের দখল না নিতে পারে সেদিকে নজর রাখার পাশাপাশি, তাহির আল সাম-বিরোধী ড্রুজ ও কুর্দিশের মতো সংগঠনের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহ দেখাচ্ছে ইসরাইল।