বিদেশে এখন
0

ইরানের নজিরবিহীন হামলায় তোলপাড় বিশ্ব

সরাসরি নিজেদের ভূখণ্ড থেকে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ইরানের নজিরবিহীন হামলায় তোলপাড় বিশ্ব। প্রতিশোধমূলক এ অভিযানে আপাতত ইতি টানলেও ইসরাইল আরেকটি ভুল করলে পরিণতি আরও মারাত্মক হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে তেহরান। ইসরাইলকে সহযোগিতা না করতে মিত্র দেশগুলোকেও সতর্ক করেছে ইরান। ইরানের ছোঁড়া ৩শ'রও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের ৯৯ শতাংশ মিত্রদের সাহায্যে আকাশেই ধ্বংসের দাবি করেছে ইসরাইল। ইরানকে ঠেকাতে জি-সেভেন জোটের সাহায্য চেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

সিরিয়ার ইরানি দূতাবাসে ইসরাইলের হামলার জবাব যে আসবে তা নিয়ে সন্দেহ তো ছিল না। কিন্তু দুই সপ্তাহের মাথায় সরাসরি ইসরাইলি ভূখণ্ডেই হামলা চালিয়ে বসবে তেহরান এতোটাও ধারণা করতে পারেনি কোনো পক্ষই। আর তাই রোববার ( ১৪ এপ্রিল) ভোররাতে জেরুজালেমের আকাশে একের পর এক বিস্ফোরণ চমকে দেয় ইসরাইল ও মিত্র দেশগুলোকে।

ইসরাইলের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, 'গত রাতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করে ইরান। মিত্রদের সহযোগিতায় এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে হামলা অনেকাংশে ঠেকাতে সক্ষম হয়েছি আমরা। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কৌশলগত অর্জন।'

ইরানের হামলার ঘটনায় ফোনালাপ হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর। মধ্যপ্রাচ্য সংকটের ইতিহাসে প্রথমবার ইসরাইল সীমান্তের ভেতরে ইরানের এ হামলার পর ঘনিষ্ঠতম মিত্রের প্রতি লৌহকঠিন সমর্থন ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্ব। ইরানের ছোঁড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের ৯৯ শতাংশই ধ্বংসে ইসরাইলকে সহযোগিতা করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জর্ডান। অদূর ভবিষ্যতেও সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বলেন, 'গত কয়েক বছর, বিশেষ করে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আমাদের ভূখণ্ডে ইরানের সরাসরি হামলার আশঙ্কায় আগে থেকেই প্রস্তুত হচ্ছিলাম আমরা। আমাদের সব ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর আছে। প্রতিরক্ষা বা আক্রমণ যেকোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত আমরা। ইসরাইল শক্তিশালী রাষ্ট্র। আমাদের বার্তা স্পষ্ট। যে আমাদের ক্ষতি করবে আমরাও তার ক্ষতি করবো।'

ইরানি দূতাবাসে ইসরাইলের হামলায় নীরব থাকলেও ইরানের পাল্টা হামলা বেপরোয়া আচরণ বলে নিন্দাও জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকসহ পশ্চিমা নেতারা। এই মুহূর্তে বিশ্ব আরেকটি যুদ্ধের বোঝা বহনে সক্ষম নয় উল্লেখ করে অবিলম্বে হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ইরান ও ইসরাইলকে সর্বোচ্চ সহনশীলতার পরিচয় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব ও চীন। এ বিষয়ে বিশ্বের শীর্ষ সাত অর্থনীতি জি-সেভেন জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

হামলার জেরে কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর খুলে গেছে আঞ্চলিক আকাশসীমা, শুরু হয়েছে বিমান চলাচল। ইরানের ছোঁড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসে ইসরাইলকে সহযোগিতার জন্য পরবর্তী লক্ষ্য জর্ডান হতে পারে বলে সতর্ক করেছে তেহরান। এরইমধ্যে জর্ডানের আকাশসীমায় কিছু উড়ন্ত বস্তু ধ্বংসেরও দাবি করেছে আম্মান। অন্যদিকে লেবাননে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ'র সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর