বিদেশে এখন , মধ্যপ্রাচ্য
যুদ্ধ
0

গাজায় ত্রাণ সরবরাহ নিয়ে দুশ্চিন্তা

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় ত্রাণ সরবরাহকারীদের নিহতের ঘটনায় সেখানে থাকা অনেক ফিলিস্তিনি দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন, কিভাবে খাবার তুলে দেবে পরিবারের মুখে। এ ঘটনায় ৪৮ ঘণ্টার জন্য রাতে ত্রাণ কার্যক্রম স্থগিত করেছে জাতিসংঘ।

আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে রাতের বেলা গাজায় কোন ত্রাণ সরবরাহ কার্যক্রম পরিচালনা করবে না সংস্থাটি। ত্রাণ সরবরাহকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের কর্মীদের নিহতের ঘটনায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘ। সোমবার রাতে খাবার সরবরাহের সময় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হামলায় এই সংস্থার ৭ কর্মী নিহত হন।

সমুদ্র পথে আসা ১০০ টন খাবার গাজায় আনলোডের সময় ইসরাইলি সেনাদের হামলায় মৃত্যু হয় ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের কর্মীদের। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড কিচেন কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়েছে ত্রাণ সরবরাহ করতে আসা কর্মীদের।

ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের প্রতিষ্ঠাতা হোসে আন্দ্রেস বলেন, 'আমার থাকার কথা ছিলো সেখানে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেতে পারিনি। কার্যক্রম তদারকি করছিলাম। শত শত টন খাবার ছিলো। ভেবেছিলাম এ এলাকাটা নিরাপদ। এর মধ্যে দুটি অস্ত্রবাহী গাড়ি আসলো। পরে আর টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি।'

এ ঘটনায় গাজায় কার্যক্রম স্থগিত করেছে আরেক মার্কিন দাতব্য সংস্থা অ্যারেনা। এই দুই সংস্থা মিলে সপ্তাহে অন্তত ২০ লাখ প্যাকেট খাবার সরবরাহ করছিলো। এই ঘটনার জোরালো তদন্তের দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বলছে, মানবাধিকার কর্মী আর সাধারণ মানুষকে রক্ষার দায়িত্ব ইসরাইলের নিতে হবে। যদিও এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ইসরাইল। এই ঘটনায় বন্ধ হয়ে যেতে পারে সাইপ্রাস থেকে তৈরি হওয়া সমুদ্রপথের করিডোর।

মার্কিন পররাষ্ট্র সদর দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথেউ মিলার বলেন, 'ইসরাইলকে বলেছি এ ঘটনার তদন্ত করতে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য তাদেরকে সতর্ক থাকতে বলেছি। মানবাধিকার কর্মীদের গাজাবাসীকে সহায়তার সুযোগ দিতে হবে। সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে হবে। আসলে কী হয়েছে সেটা ক্ষতিয়ে দেখতে হবে। তবে এখনই বলবো না ইসরাইল মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।'

গাজা উপত্যকায় সচল আছে মাত্র ১০টি হাসপাতাল। তবে এ হাসপাতালগুলো জরুরি ভিত্তিতে রোগীদের সেবা দিতে আংশিকভাবে সচল। অথচ গাজায় হাসপাতাল ছিলো ৩৬টি। কোনরকমে সচল হাসপাতালগুলোকে সহায়তা করে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গেলো ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি সেনা অভিযানে এখন পর্যন্ত ৩৩ হাজার ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ৮০ হাজার মানুষ। গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

গাজায় ত্রাণ সরবরাহকারী স্বেচ্ছাসেবী নিহতের ঘটনায় বৃহস্পতিবার ফোনালাপ করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এদিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফায় ইসরাইলের রাতভর বোমা হামলায় প্রাণ গেছে ৮ জনের। যুদ্ধের এমন সময় জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধক্ষেত্রে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করবে ইসরাইল।

এ প্রযুক্তি ব্যবহার করলে গাজায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। হিব্রু ভাষায় প্রকাশিত আউটলেট থেকে তথ্য পেয়ে জাতিসংঘ বলছে, এই সিস্টেমকে বলা হচ্ছে ল্যাভেন্ডার। যার মধ্য দিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে টার্গেট করবে ইসরাইলের সেনারা। যা যুদ্ধাপরাধের সামিল।

এভিএস