বাবা–মা অন্য দেশের নাগরিক হলেও, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিলেই সে দেশের নাগরিকত্ব পান তাদের সন্তানরা। মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর মাধ্যমে ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশটিতে এই বিধান বহাল রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে আইনটি সংশোধন করে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের ইঙ্গিত দিয়ে আসছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব বুঝে পাওয়ার আগ থেকেই জোর তৎপরতাও শুরু করেছেন নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যা ছিল তার রিপাবলিকান পার্টির নির্বাচনি প্রচারণার অন্যতম ভিত্তি। এমন পরিস্থিতিতে বাইডেন প্রশাসনের বিদায় এবং ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষমতা গ্রহণ সময় ঘনিয়ে আসায় উদ্বিগ্নে সময় কাটছে বাংলাদেশ, ভারত, ম্যাক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশ থেকে যাওয়া অভিবাসীদের।
জন্মগত নাগরিকত্ব বাতিলে ট্রাম্পের জোর চেষ্টাকে ভয়ংকর বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিল দাঙ্গার ৫ম বার্ষিকীর ঠিক আগের দিন খোদ ট্রাম্পকেও গণতন্ত্রের জন্য সত্যিকারের হুমকি বলে বিস্ফোরক মন্তব্যও করেছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। স্থানীয় সময় রোববার যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক নিরাপত্তা বিলে স্বাক্ষরের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন বাইডেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘তিনি সাংবিধানিকভাবে থাকা জন্মগত অধিকার পরিবর্তন করতে যাচ্ছেন। যদি আপনি একটি দেশে জন্মগ্রহণ করেও নাগরিক না হন, বিষয়টি কেমন? আমি মনে করি এটি ভয়ানক।’
অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে জানালেন বাইডেন। মসৃণভাবে ক্ষমতার পালাবদল প্রক্রিয়ায় ডেমোক্রেট সদস্যরা কিছুতেই ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির মতো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত, আমি মনে করি আমাদের কোন সমস্যা নেই। তাদের সাথেও কথা হয়েছে। আমরা তাদের মৌলিক গণতান্ত্রিক নিয়ম প্রতিষ্ঠার পথে থাকার আহ্বান জানিয়েছি।’
সামাজিক নিরাপত্তা বিলে স্বাক্ষর করে বাইডেন বলেন, এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে কাজের মর্যাদা এবং শ্রমিকদের মর্যাদার বিজয় হয়েছে। প্রতিদিন যারা দেশ গড়ার কাজে লড়াই করছেন তারা কখনোই এই দিনটি ভুলতে পারবেন না বলেও মনে করছেন তিনি।
জো বাইডেন বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা সম্প্রসারণে ২০ বছরেরও বেশি সময়ের পর প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমাকে চার বছর লড়াই করতে হয়েছে। নিরাপত্তা দিতে যারা তাদের জীবন উৎসর্গ করে তাদের জন্য কিছু করতে পেরে আমি গর্বিত।’
এই আইনটির মাধ্যমে অবসরে যাওয়া উচ্চ-আয়ের কর্মীদের সীমিত ফেডারেল সুবিধাকে বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ পুলিশ এবং দমকল বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধার আওতায় পেনশন পাবেন।