
বানের জলে ভাসছে ফেনীসহ কয়েকটি জেলার শতাধিক গ্রাম
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেনী। এদিকে বৃষ্টি আর উজানের ঢলে প্লাবিত হচ্ছে নোয়াখালী, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খাগড়াছড়িসহ বেশ কিছু এলাকা। এসব এলাকায় পানিবন্দি প্রায় ২৩ লাখ মানুষ। অন্যদিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

বন্যায় ফেনীতে ৫০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি
গত দু'দিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি ফেনীর ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও পরশুরাম উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষতির মুখে কৃষি ও মৎস্য খাত। সঠিক হিসাব না পেলেও স্থানীয়দের মতে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ক্ষতির শিকার হয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। টাকার অঙ্কে যা ৫০ কোটির বেশি।

একমাসের ব্যবধানে আবারও বন্যার কবলে ফেনী
মাত্র একমাসের মাথায় আবারও বন্যার কবলে পড়েছে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ১৫টি স্থান ভেঙে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। দুটি উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ২০ হাজার পরিবার। বন্যার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দুষছেন দুর্গত এলাকার মানুষ।

কাজ শেষের আগেই চূড়ান্ত বিল পরিশোধ, উত্তর দিতে নারাজ পাউবো
প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও শেষ হয়নি নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই ঠিকাদারকে চূড়ান্ত বিলও পরিশোধ করা হয়েছে। এদিকে তড়িঘড়ি করে বাকি কাজ শেষ করতে গিয়ে নৌকাডুবিতে নিখোঁজের পাঁচদিন পরেও তিন শ্রমিকের সন্ধান মেলেনি। গত (শনিবার, ২৭ জুলাই) গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের শ্রীপুরে বাবুর বাজার এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজে নৌকায় করে ব্লক ফেলার সময় ৩০ শ্রমিক নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হন। তাদের মধ্যে ২৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

'নদী ভাঙন নিয়ে পরিকল্পনা করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড'
বৃষ্টি কিংবা উজানের ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ভাঙন কবলিতের তালিকা ভারি হচ্ছে প্রতিবছর। জমা পলিতে যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের তলদেশ ভরাট হয়ে ভাসিয়ে নেয় জনপদের পর জনপদ। নদী ভাঙন নিয়ে পরিকল্পিত পরিকল্পনা করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। তাই বানের আগে বস্তা ফেলে অর্থের অপচয় না করে পরিকল্পিতভাবে খনন আর নদী ব্যবস্থাপনার দাবি গবেষকদের।

মধুমতী নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে জমি-ঘরবাড়ি
প্রতি বছরের মতো এবারও, বর্ষা মৌসুমে মধুমতী নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম। গত ১৫ দিনের অব্যাহত ভাঙ্গনে নদীগর্ভে চলে গেছে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থাপনা। আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না এ অঞ্চলের নদী পাড়ের বাসিন্দাদের। নিজ গ্রাম ছেড়ে তারা চলে যাচ্ছেন আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে।

ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বিলীন ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি
ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, গাছপালা ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। ভাঙনে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন তিন উপজেলার অসংখ্য পরিবার। চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের। এ অবস্থায় ভাঙনরোধে দ্রুত স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের। এদিকে ভাঙনে ভিটেমাটি হারানোদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

শরীয়তপুরে পদ্মার শাখা নদীতে বাঁধ নির্মাণ; পানি প্রবাহ বন্ধ
পানি প্রবাহ বন্ধ করে অপরিকল্পিতভাবে শরীয়তপুরে পদ্মার শাখা নদীতে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন এই অঞ্চলের লাখও মানুষ। পানি প্রবাহ না থাকায় নদীপথে যোগাযোগ যেমন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, তেমনি অনাবাদি থাকছে কৃষি জমি। বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে আন্দোলন তো হয়েছেই ছিল আদালতের নিষেধাজ্ঞাও। তবুও তা আমলে নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সাতক্ষীরা সীমান্তের ইছামতি নদীর বেড়িবাঁধে ভাঙন, আতঙ্কে এলাকাবাসী
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের সীমান্ত নদী ইছামতির সোলপুর এলাকায় বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী।

বন্যার পানিতে ভাসছে কুড়িগ্রামের বিস্তীর্ণ জনপদ
উজানের ঢলে ভরে ওঠা নদ-নদীর পানি ভাটির দিকে নেমে যায় ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে। সেই নদে পানি কমছে ধীরে ধীরে। মাঝখানে কুড়িগ্রামের বিস্তীর্ণ জনপদ বন্যার পানিতে ভাসছে। কমছে না দুর্ভোগ। বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা ফসলের খেত সবই পানিতে নিমজ্জিত। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি ও মাছ চাষ।

খালের উপর নির্মিত সড়কে বন্ধ পানি প্রবাহ, ভোগান্তিতে হাজারও মানুষ
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার দোগনা খালে বাঁধ দিয়ে চাষ করা হচ্ছে মাছ। খালের উপর তৈরি করা হয়েছে রাস্তা। এতে বন্ধ হয়ে গেছে পানির প্রবাহ। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তিতে হাজারও মানুষ। পানির প্রবাহ বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত জোয়ারের চাপে সাফা-মিরুখালী সড়কে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এ অবস্থার প্রায় ৮ বছর পার হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

তীর রক্ষা বাঁধ পাল্টে দিয়েছে শরীয়তপুরের চিত্র
নদী তীর রক্ষা বাঁধ পাল্টে দিয়েছে শরীয়তপুরের চিত্র। বাঁধ নির্মাণে রক্ষা পেয়েছে নড়িয়া, জাজিরা ও ভেদরগঞ্জে পদ্মা নদীর তীরবর্তী প্রায় ৫৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসবাস করা মানুষের জীবন। এতে রক্ষা পেয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকার সম্পদ। নতুন করে বসতি গড়ছে মানুষ। ব্যবসা বাণিজ্যে জমজমাট হয়ে উঠেছে হাট-বাজার। চিকিৎসা, শিক্ষা, কৃষি, আর ব্যবসায় বাণিজ্যে ফিরেছে স্বস্তি। ফলে পরিবর্তন এসেছে জীবন জীবিকায়।