স্থানীয় একজন বলেন, ‘আগে আমাদেরে এই পাশ দিয়ে বরিশাল থেকে লঞ্চ আসতো।’
প্রবীণ মানুষটির বক্তব্যই স্পষ্ট করে দেয় কতটা জীবন্ত আর প্রবহমান ছিল পদ্মার শাখা নদীটি। তবে এখন সেই জৌলুস আর নেই। পাখির চোখে দেখলে ফুটে ওঠে এই নদীর মাঝ বরাবর অপরিকল্পিত বাঁধটি। বাঁধের উত্তর দিকে নদীটি জীবন্ত দেখালেও দক্ষিণ দিকে মৃত প্রায়। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা আর শুষ্ক মৌসুমে ধু-ধু বালুচর হয়ে যায় নদীপাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। যাতায়াতের সুবিধা ও ভাঙন প্রতিরোধ হবে এমন যুক্তিতে ২০০৯ সালে সখিপুরের আনন্দ বাজার এলাকায় পদ্মার শাখা নদীতে এই বাঁধ তৈরি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
স্থানীয় আরেকজন বলেন, '২০০৯ সালে নদীর মাঝখান দিয়ে বাঁধ দিয়ে দিয়েছে। আমি কখনো দেখিনি চলমান নদী এভাবে বাঁধ দিয়ে দেই।'
তবে শুরু থেকেই বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছিল স্থানীয়রা। নেয়া হয় নানা কর্মসূচি। সে সময় তাদের সাথে একাত্মতা জানিয়েছিল বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। আন্দোলন গড়ায় আদালত পর্যন্ত। বাঁধ নির্মাণে ছিল আদালতের নিষেধাজ্ঞাও। তাও আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এই অঞ্চলের মানুষের কাছে বাঁধ এখন গলার কাঁটা। জীবন জীবিকায় পড়েছে ক্ষতিকর প্রভাব। নদীপথের যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও কৃষক।
আরেকজন বলেন, 'বাঁধের কারণে নদীপথে চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন গাড়ি ছাড়া মালামাল পরিবহণের উপায় নেই।'
নদীটি খননের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। দুই প্রান্তের যোগাযোগের জন্য সেতু নির্মাণ করার মাধ্যমে বাঁধটি অপসারণের কথাও বলছেন স্থানীয়রা।
বাঁধ দেয়াটা ভুল ছিল স্বীকার করে নদীটিকে পুনরায় বাঁচানোর উদ্যোগ নেয়ার আশ্বাস দিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবিব বলেন, 'কাজ করতে গেলে ভুল হয়। এখন নদীকে বাঁচানোর জন্য যা যা করার দরকার তা আমরা শুরু করেছি। বিভিন্ন সময়ে নদী দখল হয়ে গেছে আর যেন দখল না হয় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।'