ক্রিকেট
এখন মাঠে

বাণিজ্যিক চাহিদা হারাচ্ছে দেশের ক্রিকেট!

বাণিজ্যিক বাজারে চাহিদা হারাচ্ছে দেশের ক্রিকেট। বিশেষ করে ঘরোয়া আসরগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে একবছরে নিজস্ব তহবিল থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) খরচ করতে হয়েছে প্রায় ১৮ কোটি টাকা।

দেশের শীর্ষ আসরে স্পন্সর না থাকায় ভ্রু কুঁচকে ওঠে অনেকের। তবে কেবল প্রিমিয়ার লিগ নয়, জাতীয় ক্রিকেট লিগ-এনসিএল এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ, বিসিএলেও এবার কোনো স্পন্সর খুঁজে পায়নি বিসিবি। তার মানে লিস্ট 'এ' এবং প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের শীর্ষ তিন আসরেই স্পন্সর পায়নি বোর্ড। ফলে সবগুলো আসর পরিচালনা করতে হয়েছে নিজস্ব টাকায়, যেখানে বোর্ডের কোষাগার থেকে খরচ করতে হয়েছে অন্তত ১৮ কোটি টাকা।

সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক শামীম চৌধুরী বলেন, '১৯৮৮ সাল থেকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কখনোই স্পন্সরবিহীন ছিল না। পরবর্তী সময়ে অনেক বড় বড় কোম্পানি স্পন্সর করেছে। টাকার অংকও ছিল অনেক। আবার বিসিএল শুরুই হয়েছিল ফ্রাঞ্চাইজি দিয়ে। এ বছর একটা ফ্রাঞ্চাইজিও নাই।'

ঘরোয়া আসরগুলোতে বরাবরই বিসিবির পাশে ছিল ওয়ালটন। ডিপিএল ও এনসিএলে পৃষ্ঠপোষকতা করার পাশাপাশি বিসিএলের একটি ফ্র্যাঞ্চাইজিরও মালিকানা তাদের। তবে এবার কোথাও টাকা ঢালতে রাজি হয়নি প্রতিষ্ঠানটি। কারণ কী?

ওয়ালটনের সহকারী নির্বাহী পরিচালক রবিউল মিল্টন এখন টিভিকে বলেন, 'আন্তর্জাতিক সিরিজ চলাকালীন যখন ঘরোয়া লিগ হয়, তখন সেটা স্বাভাবিকভাবেই ঢাকা পড়ে যায়। প্রতি বছর তো আমরা স্পন্সর করি। অন্য কেউ আগ্রহ দেখায় কিনা জানি না। যদি কারও আগ্রহ থাকতো তাহলে আমাদের এই গ্যাপে তারা ঢুকে যেতো।'

কেবল ঘরোয়া আসরগুলোই নয়, জাতীয় দলের বাজার চাহিদাও কমছে। সাকিব-মোস্তাফিজদের জন্য স্পন্সর খুঁজতেও হয়রান হতে হচ্ছে বিসিবিকে। গেল ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টাইগাররা একটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলেছে স্পন্সর ছাড়া। পরবর্তীতে রবির সঙ্গে ৫০ কোটি টাকায় পাঁচ বছরের চুক্তি করে বোর্ড।

অর্ধযুগ আগেও যেখানে স্পন্সরস্বত্ব বাবদ বছরে ২০ কোটি টাকা আয় করতো, সেখানে মুদ্রাস্ফীতির সময়েও কেবল ১৪ কোটি টাকা পাচ্ছে বিসিবি। বিসিবি বলছে, বৈশ্বিক সংকটের কারণে স্পন্সর খুঁজে পেতে বেগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।

বিসিবি পরিচালক তানভীর আহমেদ টিটু বলেন, 'স্পন্সরদের হয়তো সীমাবদ্ধতা আছে। যে কারণে সবাই সম্পৃক্ত হতে পারে না। আর আমাদের কোচ ও স্টাফদের বেতন ডলারে পেমেন্ট করতে হয়। ডলারের দামও বেড়ে গেছে। সেক্ষেত্রে আমাদের পেমেন্ট ও খরচ অনেক বেড়েছে। আয় ব্যয়ের ভারসাম্য না থাকলে পরিস্থিতি কঠিন হয়।'

আইসিসির রাজস্ব বণ্টন নীতি আর হাজার কোটি টাকা এফডিআরের মুনাফায় কোষাগার এখনও ভর্তি বিসিবির। তবে নীতিনির্ধারকরা সচেতন না হলে, ক্রিকেটাররা মাঠে ভালো ফলাফল এনে দিতে না পারলে, দর্শকদের পাশাপাশি স্পন্সররা আরও আগ্রহ হারাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর