১১ মিটার লম্বা ও ৪ মিটার চওড়া দুটি রুমের এই ঘরটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ঘরের একপাশে একটি বারান্দা, বেডরুমের সাথে বসার ঘর। আছে টেলিভিশন দেখার এমনকি রান্না করার ব্যবস্থাও। দেখে মনে হতে পারে ইউরোপের কোনো বাড়ি তবে কাঠের এই দৃষ্টিনন্দন বাড়িটি তৈরি হচ্ছে বাগেরহাটে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার করোরি গ্রামে ন্যাচারাল ফাইবার নামের একটি কারখানায় তৈরি হচ্ছে ঘরগুলো। ঘরের কাঠামো, দরজা, জানালা এবং আসবাবপত্র তৈরি হচ্ছে আম, জাম, মেহগনিসহ বিভিন্ন কাঠ দিয়ে। আর বেস্টমেন্ট জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে ঘানা থেকে আমদানিকৃত কাঠ। দেশে তৈরি এসব ঘর আকৃষ্ট করছে বিদেশি ক্রেতাদের। যাতে রপ্তানিতে খুলেছে সম্ভাবনার দুয়ার। আগামী বছরের জুনের মধ্যে ১২০টি কাঠের ঘর রপ্তানি হবে ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামে।
ন্যাচারাল ফাইবারের প্রোডাকশন ম্যানেজার শংকর বিশ্বাস বলেন, ‘আপাতত আমরা শুধু ইউরোপীয়ান অর্ডার নিয়ে কাজ করছি। বর্তমানে আমরা ইউরোপের প্যারাডাইজার কোম্পানি থেকে ১২০ টি ঘর তৈরির অর্ডার পেয়েছি। যা ডেলিভারি করতে আমাদের প্রায় ৮ মাস সময় লাগবে।’
চলতি বছরের শুরুর দিকে গ্রিসের কোকোম্যাট নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বেলজিয়াম থেকে কাঠের ঘর তৈরির অর্ডার পায় ন্যাচারাল ফাইবার নামের প্রতিষ্ঠানটি। এরপর থেকে শ্রমিকদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় কাঠের বিভিন্ন অংশ জোড়া লাগিয়ে তৈরি হচ্ছে আস্ত কাঠের ঘর। যাতে তৈরি হয়েছে ৪শ মানুষের কর্মসংস্থান।
কাঠের এমন একেকটি ঘর তৈরিতে খরচ হবে ৩০ হাজার ইউরো। তবে এখান থেকে রপ্তানি করে আয় হবে ১শ কেটি টাকা। সরকারি সহযোগিতা পেলে এই খাতকে আরও এগিয়ে নেয়া সম্ভব বলছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান।
ন্যাচারাল ফাইবারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এখান ঘরের ডিজাইনটা ইউরোপীয়ান ক্রেতারা দিয়ে থাকে, আমরা শুধু ঘরটা তৈরি করে দেই। এরই মধ্যে বেলজিয়াম থেকে ক্রেতারা এসে আমাদের তৈরি ঘরগুলো দেখে সন্তুষ্ট হয়েছে। এই ঘরগুলো প্রতিটা পার্টস আলাদাভাবে খুলে প্যাকেট হয়ে বাহিরে যায়। আমরা ওখানে গিয়ে ঘরগুলো আমাদের শ্রমিক দিয়ে ফিটিংস করে দিয়ে আসি।’
কাঠের এই ধরনের বসতঘর তৈরি করতে সময় লাগে দুই দিন। বর্তমানে একটি ঘর তৈরি হলেও বাকি ঘরগুলো তৈরির কাজ চলমান রয়েছে।