আমিরাতে পণ্য পরিবহনে সংকটে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান | ছবি: এখন টিভি
0

সংযুক্ত আরব আমিরাতের খুচরা ও পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ছাড়াও ফলমূল ও শাক-সবজি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বড় অবদান রাখছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তবে ফ্লাইট স্বল্পতা ও পণ্য পরিবহনের খরচ বাড়ায় আয় কমছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। এ অবস্থায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সপ্তাহে অন্তত দু'টি কার্গো ফ্লাইট চালুর দাবি তাদের।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফল ও সবজি বাজারে দিন দিন হিস্যা বাড়ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের। দুবাইয়ের আল আওয়ির মার্কেটেই পাইকারি ও খুচরা মিলিয়ে প্রায় হাজার খানেক দোকান গড়ে তুলেছেন তারা।

খুচরা ও পাইকারি ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য প্রসারে ভূমিকা রাখছেন অনেক প্রবাসী।

প্রবাসীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘অধিকাংশ স্টলেই বাংলাদেশিরা ব্যবসা করছে। আমাদের বাংলাদেশিদের ব্যবসা-বাণিজ্য খুব ভালো, আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো আছি আমরা এখানে।’

কচু, কচুর লতি, পটল, কাঁকরোল, করলা, বরবটিসহ নানা পদের শাক-সবজি সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাজারে নিয়ে আসছেন বাংলাদেশ থেকে। এমনকি আম, কাঁঠাল, লিচু, বেল, আনারসের মতো মৌসুমি ফলমূলও বাংলাদেশ থেকে আমদানি করছেন অনেকে। যাদের বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ ডলার।

পরিসংখ্যান তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৬২ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের শাকসবজি আমদানি হয়েছে আরব আমিরাতে। ফলমূল ৭০ হাজার ডলারের। বিগত অর্থ বছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারির তুলনায় শাকসবজি আমদানি অর্ধেকে নেমে এসেছে। তবে বাংলাদেশ থেকে ফলমূল আমদানি কিছুটা বেড়েছে। আগামী মে মাস থেকে মৌসুমি ফল ও সবজি আমদানি বাড়ার প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, কেবল দুবাইয়েই তাজা সবজি ও ফলমূলের দিনে চাহিদা আছে ১০ টনের। চাহিদার তুলনায় সপ্তাহে তারা পাচ্ছেন তিন থেকে চার টন। বাজারের চাহিদা মেটাতে কলকাতা থেকেও ফল ও সবজি আমদানি করছেন কেউ কেউ। এর জন্য বাংলাদেশ থেকে পর্যাপ্ত কার্গো ফ্লাইট সুবিধা না পাওয়াকে দায়ী করছেন তারা।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ী কে কে বিপ্লব বলেন, ‘অনেক বছর থেকেই ফল ও সবজি ইমপোর্ট করে থাকি। কিন্তু গত দুই বছর থেকে আমাদের একটু সমস্যা হচ্ছে। আমাদের যতগুলো ইমপোর্ট করা দরকার ততগুলো আমরা ইমপোর্ট করতে পারছি না।’

দেশ থেকে আমদানি করা এসব পণ্যের ক্রেতাও বেশিরভাগ বাংলাদেশি। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকা, দেশিয় পণ্যের আরও চাহিদা বাড়াতে এবং বিদেশি ক্রেতা ধরতে পণ্য বহনের খরচ কমানো প্রয়োজন বলেও মনে করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবসায়ী জুলফিকার ওসমান বলেন, ‘আমাদের প্রোডাক্টগুলো আমরা এখন বাই এয়ারে নিয়ে আসি। এতে আমাদের খরচ অনেক বেশি পড়ে। সেজন্য অন্যান্য দেশের সাথে আমরা প্রতিযোগিতা করে দাঁড়াতে পারছি না। আমরা আশা করবো সরকার যদি আমাদের এদিকে একটু নজর দেয় আমরা অনেক বেশি পণ্য নিয়ে আসতে পারবো। অনেক বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আমরা দেশে পাঠাতে পারবো।’

তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশিয় ফল ও সবজির মতো পণ্যের আউটপুট প্যাকেজিংয়ের মান অনুন্নত। এটি বিশ্বমানের করার উপর জোর দেয়ার তাগিদ দিচ্ছেন তারা। পাশাপাশি বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বাড়াতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সপ্তাহে অন্তত দু'বার সরাসরি কার্গো ফ্লাইট পরিচালনার দাবি ব্যবসায়ীদের।

এসএস