বিশেষ প্রতিবেদন
দেশে এখন
0

জানুয়ারিতে খুলছে যমুনা রেলসেতু, উদ্বোধনের আগেই নাম পরিবর্তন

নতুন বছরের জানুয়ারিতেই জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হবে যমুনা নদীর পর নির্মিত রেলসেতু। তবে রেলওয়ে মহাপরিচালক আফজাল হোসেন বলছেন, উদ্বোধনের আগেই পরিবর্তন হয়ে আগের নামে ফিরবে সেতুটি। দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণের মেলবন্ধন এই সেতু দিয়ে একসাথে দু'টি ট্রেন আসা যাওয়া করতে পারবে। তাতে এ পথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বাড়বে দ্বিগুণ।

পুরাতন যমুনা বহুমুখী সেতু থেকে ৩০০ মিটার উজানে সমান্তরালে দৃশ্যমান হয়েছে নতুন নির্মাণ। চার দশমিক আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতু শুধু টাঙ্গাইল আর সিরাজগঞ্জের দূরত্ব কমিয়েছে তা নয়। তৈরি করেছে দেশের উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণের মেলবন্ধন।

নির্মাণ সঙ্গীরা বলছেন, বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উৎকর্ষ মিলবে এখানে। বলা হচ্ছে, সেতুতে ব্যবহৃত লোহার পাতের রং ও ধরন শত বছর স্থায়ীত্বের। তাতে রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় কমবে কয়েকগুণ।

সেতুর নির্মাতাদের মধ্যে একজন বলেন, 'থার্ডপার্টি টেস্ট করানো হয়েছে বাইরে। এবং কিছু ম্যাটেরিয়াল যেগুলো আমরা বাংলাদেশ থেকে সংগ্রহ করেছি, সমস্ত ম্যাটেরিয়াল বুয়েট থেকে টেস্ট করা হয়েছে।'

অন্য একজন নির্মাতা বলেন, 'বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসলে এই ব্রিজটি করা হয়েছে। একদম আধুনিক টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে ব্রিটা করতে গিয়ে। এবং কোয়ালিটি বিষয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ করা হয়নি।'

এটি চালু হলে ঢাকার সঙ্গে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যেমন গতি আসবে তেমনি আন্তর্জাতিক মালবাহী ট্রেন চলাচল হবে এ পথে ধরে। যেখানে ৫০ মিনিটের পথ পাড়ি দেয়া যাবে পাঁচ মিনিটে। প্রকল্প পরিচালক বলছেন, কাজ শেষ হয়েছে সবই। নতুন বছরের জানুয়ারীতেই হবে উদ্বোধন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান বলেন, 'আমাদের যে ফাউন্ডেশনের নির্মাণ করেছি সেটা স্টিল পাইপ সীট পাইলের উপরে। অন্যান্য ব্রিজগুলো যেটা আছে সেগুলোতে মাইল্ডস্টিল ব্যবহার করা হয়। সেটা প্রতি তিন বছর পরপর পেইন্ট করতে হয় স্টিলের স্থায়ীত্বটা রক্ষার জন্য। কিন্তু এখানে ১০০ বছরে এক শতাংশের বেশি নষ্ট হবে না। ব্রডগেজ ট্রেনের জন্য ১২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। এবং মিটারগেজ ট্রেনের জন্য ১০০ কিলোমিটার প্রতিঘণ্টায়। ফুলস্পিডে এই সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল করলে আমরা আগে যেখানে এ স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনে যেতে অলমোস্ট ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট সময় লাগতো, এখন সেটা পাঁচ মিনিটে সম্ভব হবে।'

রেলওয়ের নতুন মহাপরিচালক আফজাল হোসেন বলছেন, উদ্বোধনের আগেই পরিবর্তন হয়ে আগের নামে ফিরবে সেতুটি। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে সকল প্রক্রিয়া।

তিনি বলেন, 'এটা আসলে আমাদের যখন জাইকার সাথে চুক্তি হয় তখন কিন্তু যমুনা রেলসেতু নামেই লোন চুক্তি হয়। পরে পরিস্থিতির কারণে প্রজেক্টের নাম পরিবর্তন হয়। কিন্তু আমরা আগের অবস্থায় ফিরে আসার জন্য প্রস্তাব করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় এটার অনুমোদন দিলে নাম পরিবর্তন হয়ে যাবে।'

পদ্মা সেতু এবং যমুনা রেলসেতুর মধ্যে অন্যতম পার্থক্য এর রেললাইনের সংখ্যায়। এটি ডাবল লাইন হওয়ায় একইসময়ে একইসাথে দু'টি ট্রেন আসা-যাওয়া করতে পারবে। তাতে যখন এটি পুরোপুরি চালু হবে তখন যেমন যাত্রীবাহী ট্রেনের যাত্রার সংখ্যা বাড়বে, তেমনি কমবে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে সেটি।

এসএস