আদা, রসুন, পেঁয়াজ, ভ্যানিলা, আলুবোখারাসহ ৪৬টি দেশি-বিদেশি মসলারল উপর গবেষণা চলছে বগুড়ার মসলা গবেষণা কেন্দ্রে। এর মধ্যে ২৪টি মসলার ৫৮টি উন্নত জাত উদ্ভাবনের দাবি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের। যার মধ্যে পেঁয়াজের সাতটি জাতসহ আদা, রসুন, মরিচ কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদ চলছে। সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে বারি-১ ও বারি-২ জাতের বস্তায় আদা চাষ প্রক্রিয়া।
বগুড়া মসলা গবেষণা কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান সুজা বলেন, 'অদূর ভবিষ্যতে আমাদের এই প্রযুক্তি আরও ছড়িয়ে যাবে এবং এই প্রযুক্তি আরও টিউনিং এবংর ডেভেলপ করে আমরা কৃষকের কাছে নিয়ে যেতে পারবো। যেখান থেকে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আদার চাহিদা আমাদের পূরণ হবে বলে আশাবাদী।'
বস্তায় আদা চাষ বেশ সাড়া ফেললেও, আমদানি নির্ভরতায় দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন আসেনি। মসলা গবেষণা কেন্দ্রে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকলেও ভোক্তা পর্যায়ে প্রভাব ফেলেনি তাদের উদ্ভাবন। কোনো কোনো মসলার জাত উদ্ভাবনের পর কৃষক পর্যায়ে পৌঁছাতে এক যুগেরও বেশি সময় লেগেছে বলেও জানান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা।
বগুড়া মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু হেনা ফয়সাল ফাহিম বলেন, 'গবেষণা একটি লং টাইম প্রসেস। আমাদের সার্চ করতে হয়। বিভিন্ন দিক গবেষণা করতে হয়। আলটিমেটলি কৃষকের উৎপাদনের উপযোগী করে গবেষণা করতে হয়। সেক্ষেত্রে গবেষণার ক্ষেত্রে এক বছরেই যে ফসলগুলোর বীজ আমরা সংগ্রহ করতে পারি তারপরও কমপক্ষে ছয় বছর লেগে যায় একটা জাত উদ্ভাবন করতে।'
পোস্ট-হারভেস্ট প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন মসলা সংরক্ষণ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন বিশেষজ্ঞরা। আদার গুঁড়া, রসুনের আচার, পেঁয়াজের গুঁড়াসহ প্রায় ৩০টি মসলার পোস্ট-হারভেস্ট পদ্ধতি সম্পূর্ণ প্রস্তুত। পেঁয়াজ গুড়া করে সংরক্ষণের পদ্ধতি উদ্ভাবন হয় প্রায় পাঁচ বছর আগে। কিন্তু ভোক্তা পর্যায়ে তা পৌঁছার অনুমতির জন্য কাগজপত্র এখনও ফাইলবন্দি জানান কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাসুদ আলম বলেন, '৩০টি প্রডাক্ট আমরা মসলা ফসলের ওপর প্রোসেস করে ডেভেলপ করেছি। বেশকিছু প্রোডাক্ট যে বাংলাদেশে নতুন করেছে, এর জন্য আমরা শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছি। শিগগিরই হয়তো এর জন্য ক্লিয়ারেন্স পাবো। তখন আমরা এটি বিভিন্ন কোম্পানিকে দেবো। ইতোমধ্যে অনেক কোম্পানি আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছে।'
১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মসলা গবেষণা কেন্দ্রে দেশি-বিদেশি মসলার উপর নিয়মিত গবেষণা চলছে। বিভিন্ন উন্নত জাত উদ্ভাবনের পর তা দ্রুত কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়ার প্রত্যাশা সবার।