দেশে এখন
0

সাইফুল হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে সোচ্চার বন্দরনগরী চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে সরকারি কৌঁসুলি সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে সোচ্চার বন্দরনগরী। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমাবেশ থেকে দাবি ওঠে ইসকন নিষিদ্ধের। একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জোর দাবি। এদিকে বন্দরনগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে আইনজীবী সাইফুলের জানাজায় ঢল নামে মানুষের। এতে অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শীর্ষ নেতারা, বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এসময় পতিত ফ্যাসিবাদ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সমন্বয়করা।

চট্টগ্রামের সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলামের জাহাজায় অংশ নিতে আজ (বুধবার, ২৭ নভেম্বর) সকাল থেকেই জামিয়াতুল ফালাহ প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন শোকাহত জনতা। মুহূর্তেই যা রূপ নেয় গণজমায়েতে।

সকাল ১০টায় লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে হয় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজা। অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম। জানাজায় অংশ নিয়ে তারা জানান, পতিত ফ্যাসিবাদ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে বলেও দাবি করেন তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, 'এটা ভারতে বসে আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র। এটা স্বীকার করতে হবে এই দেশে হিন্দুত্ববাদী রয়েছে। এই হিন্দুত্ববাদী মনোভাবটা, এই উগ্রবাদী মনোভাবটা স্বীকার করতে না পারলে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না।'

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, 'যারা মাসের ৩০ দিনের মধ্যে ২৫ দিন দেহটা নিয়ে এই বাংলাদেশে বসে থাকে, আর বাকি পাঁচদিন মনটা নিয়ে ভারতে যায়, সেখানে চক্রান্ত করে। এবং সেই চক্রান্তের এক্সিকিউশন এই বাংলাদেশে এসে ঘটায় সেসকল উগ্রবাদী হিন্দুদেরকে প্রতিহত করার জন্য আমাদের মনে বিন্দুমাত্র সহানুভূতি থাকবে না।'

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, 'সন্ত্রাসীর কোনো ধর্ম নেই। কোনো দল নেই। সন্ত্রাসীকে আমরা সন্ত্রাসী হিসেবে ট্রিট করবো। যে দলের, যে ধর্মের, যে বর্ণের হোক অনতিবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।'

এর আগে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে আদালত বর্জন করে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন আইনজীবীরা। পরে আদালত চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জানাজা। যেখানে অশ্রুসিক্ত চোখে সহকর্মীর জানাজায় অংশ নেন আইনজীবীরা। এসময় জানাজায় অংশ নিয়ে ভূমি উপদেষ্টা হাসান আরিফ জানান, হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। একইসঙ্গে চলমান পরিস্থিতিতে সবাইকে শান্ত থেকে সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।

ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেন, 'যেভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তার মধ্যে নিয়ে আসা-যাওয়া প্রয়োজন, সেখানে সকলের অভিযোগ সেখানে যথেষ্ট ত্রুটি ছিল। সে বিষয়ে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে খতিয়ে দেখা হোক।'

এদিকে গতকাল (মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর) রাত থেকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। যার মধ্যে ছয়জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যারা নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সদস্য।

উপপুলিশ কমিশনার সিএমপি ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনের মো. রইস উদ্দিন বলেন, 'যারা এ ধরনের উশৃঙ্খলতার সাথে জড়িত ছিল তাদের গেপ্তারের জন্য, আটকের জন্য আমরা কিন্তু সারারাত কাজ করেছি। আমাদের যৌথবাহিনী একটা অভিযান পরিচালনা করেছে। কোতোয়ালি থানায় বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযান পরিচালিত হয়।'

হত্যার ঘটনা কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরীতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য।

এসএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর
ভিসা প্রক্রিয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে খালেদা জিয়া

চাঁদাবাজির মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন তারেক রহমান

কামরুলকে ৩ দিন, আনিসুল হকের ৩ ও ফিরোজকে ২ দিনের রিমান্ড

বড়পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ তিন আসামিকে অব্যাহতি

চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে খালাস

ইসকনের বিষয়ে সরকার তথ্য যাচাই-বাছাই করছে: অ্যাটর্নি জেনারেল

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের জানাজা অনুষ্ঠিত

চট্টগ্রামে আইনজীবীকে হত্যা: নিন্দা জানিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

কাল বিচারিক কার্যক্রমে অংশ না নেয়ার ঘোষণা চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির

'সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী যত বড় নেতা হোক ছাড় দেয়া হবে না'

কালকের মধ্যে চিন্ময় দাসকে মুক্তি না দিলে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

পাকিস্তানে বিক্ষোভ: প্রাণ গেছে ৭ জনের